কোষ্ঠকাঠিন্য বা Constipationem ) পরিপাকতন্ত্র – পর্ব ৮ (খ)

কোষ্ঠকাঠিন্য শনাক্ত করার জন্য সচরাচর যে লক্ষণগুলি দৃষ্টিগোচর হয় , তা হলো:

শক্ত পায়খানা হওয়া ( কারও কারও বেলায় কখন ও কঠিন কখন ও নরম ) – পায়খানা করতে অধিক সময় লাগবে এবং বেশী চাপ দিয়ে পায়খানা করতে হয়, শক্ত পায়খানা হওয়ার জন্য জমাটবদ্ধ মল সহজে মলদ্বার দিয়ে নির্গত হয় না হলেও খুব কস্ট কষ্ট হবে -কিন্তু এরপর ও মনে হবে পায়খানা আটকে আছে বা পূর্ণ হয়নাই – সে জন্য মলদ্বারের আশপাশে ও তলপেটে ব্যথার অনুভব হতে পারে ( পেটে ব্যথা মাঝেমধ্যে থাকবে, আবার কিছু সময় থাকবে না যা গ্যাস্ট্রিক ব্যাথা থেকে একটু ভিন্ন )
অথবা – শক্ত পায়খানা হওয়ার জন্য পায়খানার রাস্থা চিঁড়ে যাওয়া বা আঁচড় পরার জন্য মাঝে মধ্যে রক্ত আসতে পারে ( যা দেখতে টাটকা রক্ত মনে হবে এবং সে সময় ব্যাথা ও জ্বলা থাকবে এবং পাকস্থলী বা অন্ত্রের আলসারের কারনে রক্ত আসলে তা মলিন ও কাল দেখাবে ) , কেউ কেউ সে সময় আঙুল কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে পায়খানা বের করার চেস্টা করেন – কারও কারও বেলায় পেট ফুলে থাকা, স্ফীতি কিংবা তলপেটে বা উদরে অস্বস্তি বোধ হওয়া, উপরের দিকে ঢেঁকুর আসা বা বমি ভাব থাকতে পারে ।
কোষ্ঠকাঠিন্যতায় শরীরের অন্যান্য যে সকল অসুখ দেখা দিতে পারে ঃ-
রক্তাল্পতা, অবসাদ(ক্লান্তি), অনিদ্রা, চোখে ব্যথা, চোখের নিচে কালি পড়া, মাথা ঘোরা, কোমর ব্যথা, ক্রমান্বয়ে আলস্য বৃদ্ধি পাওয়া এবং মনোযোগ হ্রাস পাওয়া। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যত তীব্র হয়, রোগী তত বেশি দুর্বল ও হীনমন্য হয়ে পড়ে ( বিশেষ করে বয়স্কদের বেলায় ) দীর্ঘস্থায়ী বোষ্টকাঠিন্য থেকে চর্ম রোগ হতে পারে;- যেমন, চুলকানি, মুখে ঘা, মেচেতা ইত্যাদি। পুরুষদের বেলায় যৌন শক্তি হ্রাস, পেটে তীক্ষ্ণ ব্যথা , পেটের জ্বালাপোড়াসহ ব্যথা , বমি বমি ভাব ,তলপেটে ব্যথা মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ , মলের সাথে রক্ত যাওয়া , মুত্র আটকে যাওয়া ,মল দেখতে অস্বাভাবিক লাগা , কোমড় ব্যাথা, —— ইত্যাদি
কোষ্ঠকাঠিন্য দ্বিতীয় ধাপে জটিল রোগ না হলেও তৃতীয় ধাপে জটিল সমস্যায় রূপ নিতে পারে।
অসুখ যত পুরাতন হবে তথোই অন্য অসুখ মারাত্মক পর্যায়ে দেখা দিবে তার মধ্যে ৭০% বেলায় পাইলস অথবা এনালফিশার দেখা দিয়ে থাকে , ৫% বেলায় রেকটাল প্রোল্যাপস ( মলাধার বাহির হয়ে আসা ) , ৫% বেলায় খাদ্যনালিতে প্যাঁচ লাগা ও অন্ত্রে ছিদ্র হওয়া, ২% বেলায় রেক্টামে স্নায়ুর অবশতার ফলে মল ধরে রাখার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া, ১% বেলায় কোলন ক্যানসার ইত্যাদি দেখা দিয়ে থাকে ।
পরীক্ষা- নিরীক্ষা ঃ-

রিসার্চ অনুসারে ঃ- টাইপ ওয়ানের জন্য তেমন পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন নাই শুধু মাত্র চিকিৎসকের মূল্যবান উপদেশ সমুহ ও নিয়ম বিধি পালন করলেই তা সেরে যাবে ( খাওয়ার মেনু ) কিন্তু ২য় ও ৩য় ধাপে অবশ্যই সঠিক পরীক্ষানিরীক্ষা করতেই হবে । কারন দীর্ঘ স্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যতা তৈরি হয় অন্য যে কোন একটি অসুখের কারনে এবং তা খুঁজে বাহির করতে না পারলে , যতই ঔষধ সেবন করেন- তা পূর্ণ সেরে যাওয়ার আশা করা ঠিক নয় বরং সে সময় কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করার ঔষধ ই আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যতা ঢেকে আনবে । সে জন্য অবশ্যই ভাল ও বিজ্ঞ বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন । তারপর ও অল্প কিছু সকলের জেনে রাখা ভাল বলেই মনে করি ।
প্রথমেই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আপনার দৈহিক পরীক্ষা নিরীক্ষা সহ রোগের ইতিহাস জানার চেস্টা করবেন ।
যেমন, পায়খানা করার অভ্যাসগত কোন ত্রুটি, পায়খানা কখন বা কতদিনে এবং এর ধরন ইত্যাদি জানাতে হবে, পায়খানা হওয়ার সময় ব্যাথা- জ্বালা পোড়া – কেমন শক্ত-ইত্যাদি, সেই সাথে খাওয়ার মেনু কতদিন আগে পরিবর্তন করেছেন – বিশেষ করে প্রাণীজ প্রোটেন এবং মিষ্টি জাতীয় খাবারের পরিমাণ কেমন বৃদ্ধি পেয়েছে – ইত্যাদি ।
অন্য অসুখের জন্য যে কোন ধরনের ঔষধ সেবন করিতেছেন কিনা ? ( এন্টাসিড, আয়রন,ক্যালসিয়াম, প্রস্রাব বৃদ্ধি কারক,উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ, অন্ত্রের ব্যাথা নাশক, এন্টি হিস্টামিন, ডায়রিয়া রোধক, ইত্যাদি )
ফাংশনাল অন্যান্য অসুখ বিসুখ যেমন , পাইলস, ফেস্টুলা, এসিডিটি, হার্টের অসুখ, ডিপ্রেশন, নিউরোপ্যাথি , আই বি এস, ডায়াবেটিস মেলাইটাস, হাইপার থায়রডিজম, কোলন ক্যানসার, পারকিনসন্স ইত্যাদির কোন লক্ষণ আছে কিনা ।
এরপর বিজ্ঞ চিকিৎসক ফিজিক্যাল এক্সামের জন্য সম্পূর্ণ নিচ পেট-উপর পেট ইত্যাদি অঞ্চলে চাপ প্রয়োগ করার সময় কোথায় কোন ব্যাথা অনুভব করলে তা কিভাবে উপলব্দবি হইতেছে পরিস্কার করে বুজানোর চেস্টা করবেন ।
তখন প্রয়োজন অনুসারে – সম্মানিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চাইলে আপনার মলদ্বার পরিক্ষার জন্য লোব্রিকেন্ট জেল লাগিয়ে আপনার পায়খানার রাস্থা এবং এর ভিতরে কোন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে কিনা তা আঙ্গুল ঢোকিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন । ( অবশ্য বর্তমানে আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি ও আছে যাকে এনাল স্পিংটার ব্রিফ পদ্দতি বলা হয় যা ছোট একটি নল পায়খানার রাস্থার ভিতর ঢোকিয়ে বেলুনের মত ফোলিয়ে মনিটরে দেখা বা রেকর্ড করা যায় ( Pressure monitoring balloon বা anorectal manometry). )
অতঃপর আপনার রোগের ধরন বুঝে সম্মানিত চিকিৎসক
– নিচের যে কোন ধরণের পরীক্ষা হাস্পাতাল অথবা ডায়াগনোসিস সেন্টারে করানোর জন্য উপদেশ দিতে পারেন ( বিশেষ করে ক্রনিক কন্সটিপেশন টাইপ টু বেলায় ) ।
সম্পূর্ণ ব্লাড টেস্ট (CBC)
থায়রইয়েড ফাংশন পরীক্ষা যদি হাইপোথায়রয়েডের সমস্যা থাকে ।
পাকস্থলী বা অন্ত্রের সমসসা মনে করলে ঃ- নর্মাল চেস্ট এক্সরে করে বুক এবং পেটে অন্ত্র লিক করে বাতাস জমা হইতেছে কিনা অথবা বেরিয়াম মেইল এক্সরে করে কোলন ও অন্ত্রের কোন জায়গায় অবস্ট্রাকশন বা প্রতিবদ্ধতা জাতীয় কিছু আছে কিনা দেখতে পারেন । বর্তমান আধুনিক পদ্দতিতে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সে জন্য ইন্ডোস্কপি করে লাইভ ভিডিও চিত্র দেখার কথাই বলা হয় ( যদি ও তা একটু ব্যায়বহুল )
অথবা যদি পেটের ব্যাথা, অনিয়ত্রিত পায়খানা বা আই বি এস এর দীর্ঘদিনের সমস্যা থাকে তা হলে কোলন্সকপি ( Colonoscopy ) বা কোলন বায়োস্পি করার কথা বলতে পারেন । কোলনের ভিতরের লাইভ ভিডিও দেখে এবং সেখান থেকে কিছু অংশ কেটে এনে তা পরীক্ষা করার কথা বলতে পারেন ( বিশেষ করে কোলনের ক্যানসার জাতীয় সমস্যায় খুবী জরুরী ) । পরীক্ষাটি হাসপাতালে রেখে গ্যাস্ট্রোইন্ট্রলজিস্টরা নিজ দায়িত্বে খুবী সতর্কতার সাথে করার কথা বলে থাকেন ।
ঠিক তদ্রূপ পায়ুপথ, মলাশয়, এবং কোলনের নিচের যে কোন অংশে সমস্যা মনে করলে সিগময়েডোস্কপি করার কথা বলতে পারেন ( চিকিৎসকরা নল যুক্ত ক্যামেরা পায়খানার রাস্থায় ঢোকিয়ে নিচের কোলন, মলাশয়, পায়ু পথ এবং তার আশে পাশের অংশ সমুহ লাইভ ভিডিও চিত্র দেখে অসুখটি নির্ণয় করার চেস্টা করেন ।
অসুখের গুরুত্বর ক্ষেত্রে, ক্লিকনিক্যাল ম্যাথড অনুসারে অনেক সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হাসপাতালে রেখে Colonic transit rate test করার কথা বলতে পারেন । ( অর্থাৎ খাবার খাওয়ার পর কত ঘন্টা পর এবং কিভাবে খাবার সমুহ অন্ত্র হতে স্তানান্তরিত হইতেছে তার জন্য বিশেষ কিছু পর্যবেক্ষণ বা মনিটর পদ্ধতি )
কোষ্ঠকাঠিন্যতার চিকিৎসা ,ব্যবস্থাপনা ও বিকল্প ব্যবস্থাপনা ঃ

পরিসখান অনুসারে ঃ- যদিও আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যতা দেখা দেওয়ার পর নানা রকম ওষুধ দিয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে সমস্যাটি দূর করে দেয়া সম্ভব। কিন্তু এই সুফল ধরে রাখার জন্য অবশ্যই খাদ্য অভ্যাস এবং জীবন যাপনের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। তা না হলে এই সমস্যা অন্ধ চক্রের মতো পুনরায় ফিরে আসবে এবং যে কোন রোগের কারণে যদি এ ধরণের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, তখন যদি দ্রুত সে রোগের চিকিৎসা করাতে পারেন তাহলে অবশ্যই কোষ্ঠকাঠিন্যতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা ।
বিশ্ব ব্যাপী ১২% মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যতার স্বীকার হয়ে থাকেন তার মধ্যে দরিদ্র সীমানার দেশ সমুহে ( মধ্য ও উচ্চ বৃত্ত ) ২৭% মানুষ বেশী কোষ্ঠকাঠিন্যতায় ভুক্ত ভোগী । অন্য এক জরীপে দেখা যায় বৃদ্ধ বয়সে শতকরা ৯০% মানুষ কোন না কোন ভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যতার স্বীকার হয়েই থাকেন যার জন্য ফাংশনাল সমস্যাই বেশী দায়ী —
গবেষণা ও প্রমান অনুসারে দেখা যায়, প্রাথমিক অবস্থায় ৭৯% কোষ্ঠকাঠিন্যতা কমে যাবে যদি স্থায়ী ভাবে নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার গ্রহন করেন । সেই হিসাবে জাপানের বয়স্ক রোগীরা সবচেয়ে বেশী এগিয়ে বা তাদের এখন ও খুব কম সংখ্যক রোগী কোষ্ঠকাঠিন্যতা, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ব্লাডপ্রেসার ইত্যাদি রোগে ভুগে থাকেন । মোট কথায় এ জাতীয় অসুখে প্রানি ভোজী রোগীরাই বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকেন । সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায় ভারত ও বাংলাদেশে এই জাতীয় অসুখ আগের চাইতে দ্বিগুণ বেশী বেড়ে গেছে , এর মুল কারণ ক্যামিকেল ও ভেজাল যুক্ত খাবার এবং সেই সাথে মাংস জাতীয় খাবার খুব বেশী খাওয়ার প্রবণতা বেড়েই চলছে । সুতারাং যে কেউ চুখ বুজেই বলতে পারবেন – যে পরিবারে, শাকসবজি জাতীয় খাবারের ইচ্ছা কম , সেই পরিবারে পাকস্থলী ও তার সাথে সম্পর্ক যুক্ত অসুখ বিসুখ একটু বেশী লেগেই থাকবে ( সুত্র পাবলিক হেলথ, এশিয়ান মেডিক্যাল জার্নাল – ডাঃ হেলাল কামালি )
কোষ্ঠকাঠিন্যতায় আপনার চিকিৎসক যে সকল মূল্যবান পরামর্ষ ও চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন ঃ-
১- খাদ্য তালিকায় মেনু পরিবর্তন করুন ঃ
আঁশজাতীয় খাদ্যগ্রহণ ক্রনিক কন্সটিপেশন নিরাময়ের জন্য অতি পরিচিত একটি সমাধান। প্রয়োজনীয় পরিমাণে (২০ থেকে ৩৫ গ্রাম) আঁশ যা ফল, শাকসবজি ও বিভিন্ন খাদ্যশস্যে পাওয়া সম্ভব। এই খাদ্যগুলি আপনার দৈনন্দিক খাদ্য তালিকায় একটু বেশী যুক্ত করুন –
সেলুলোজ বা আঁশ জাতীয় খাবার খুব কম ও দীর্ঘ সময়ে হজম হয় বিধায় অন্ত্রে ৪০% খাবার প্রায় অপরিবর্তিত অবস্হায় থেকে যায় এবং অন্ত্র ও মলাশয়ের বেশ কিছু জলীয় অংশ শোষণ করে ধরে রাখে । পরে জলীয় অংশসহ এগুলো মলের সঙ্গে বের হয়ে আসে। এতে মল নরম হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যতা প্রতিরোধ হয়। অর্থাৎ আরামদায়ক মল ত্যাগের জন্য বেশ ভাল একটা উপায় ।
আঁশজাতীয় খাদ্য কয়েক প্রকারের হলেও প্রধানত দুই ধরনের
১- দ্রবণীয় আঁশ বা সলিউবোল ফাইবার ঃ-ইহা ক্ষুদ্র আঁশ যুক্ত যা পানিতে খুব সহজেই মিশে যায় অর্থাৎ এ জাতীয় খাবার খুব সহজেই শরীর থেকে গ্লকোজ হজম করে রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও পানিকে চোষে নেয় এবং অন্ত্রের ভিতরের খাবার সমুহ অন্যান্য এজাইম ও পাচকরসের সংমিশ্রণে মন্ডে রুপান্তরিত হয় খুব অল্প সময়ে ।
যেমন – ডাল, সিদ্ধ চালের ভাত, আটা, তিল, কাঁচামরিচ ও সরিষাতে, পেপে, আলু, শাক-কচুশাক, মিষ্টি আলুর শাক, কলমিশাক, পুদিনা পাতা, পুঁইশাক, মুলাশাক, ডাঁটাশাক, লাউয়ের ও মিষ্টি কুমড়ার আগা-ডোগা শাক, গাব, কামরাঙ্গা, পাকা টমেটো, পাকা আম, পাকা কলা, পাকা কাঁঠাল, আপেল ও আমলকী ইত্যাদি । ( হলুদ বর্ণের সকল ফল )
২- অদ্রবণীয় আঁশ বা ইন-সলিউবোল ফাইবার ঃ- ইহা শক্ত আঁশ যুক্ত , যে খাবার সমুহ খুব কম পরিমাণে পানিতে দ্রবীভূত হয়ে থাকে অর্থাৎ শক্ত সেলুলুজ ( শক্ত বাকল ) থাকায় পাকস্থলিতে উক্ত খাবারের খুব কম অংশ পচিত হয় বা ধীরে ধীরে হজম হয় । সেই সাথে উক্ত আঁশ , পানি ও অন্যান্য এনজাইম জাতীয় পাচক রস ধরে রাখে বিধায় বেশির ভাগ খাদ্য অর্ধ পচিত অবস্থায় মলাশয়ে জমা হয় এবং মল নরম থাকে ।
যেমন ঃ- ওট, পালং শাক, ব্রকোলী , সজনে, কলার মোচা, ঢেঁড়স, ডাঁটা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, শিম, পটোল, কচু, বেগুন, বরবটি, মটরশুঁটি, বেল, পেয়ারা, কদবেল, আমড়া, আতাফল, নারকেল, কালোজাম, মটর, মুগ, ছোলা ও খেসারি ডাল ইত্যাদি ।
তবে ! মনে রাখবেন অতিরিক্ত ফাইবার যুক্ত খাবার আবার অন্ত্র এবং কোলনে ব্যাক্টোরিয়া সমুহ গ্যাস উৎপন্ন বেশী করে বিধায় মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ও ঠিক নয় যা একেক জনের বেলায় একেক রকম অথবা যাদের অন্ত্রের এলারজির সহিষ্ণুতা শক্তি কম তাদের বেলায় এলারজি উক্তেজক ফাইবার জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ ।
২– ব্যায়াম

সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন পদ্মাসন বা যৌগ- ইয়োগা জাতীয় ব্যায়াম করুন ( যারা ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন তিনিদের এই সব ব্যায়ামের প্রয়োজন নাই – কেন না পবিত্র নামাজে ইয়োগা জাতীয় ব্যায়ামের অনুশিলনে সব কিছুই নিহিত আছে ) এতে পাকস্থলী ও অন্ত্রের নড়াচড়া , স্নায়ুবিক প্রসারণ ও দৈহিক রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে । একি সাথে সপ্তাহে এক দুই দিন সাঁতার কাটার চেস্টা করুন ।

যদি উপরের নিয়ম ব্যার্থ হয় তবে ল্যাক্সেটিভ দেয়া যেতে পারে। চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থার উপর বিবেচনা করে তিন ধরণের ল্যাক্সেটিভ ড্রাগসে মধ্যে যে কোন একটি গ্রোফের ঔষধ সেবন করার পরামর্ষ দিয়ে থাকেন । খেয়াল করবেন, এই ল্যাক্সেটিভ সমূহের মধ্যে স্টিমুলেন্ট ল্যাক্সেটিভ গ্রোফের ঔষধ সমুহ দীর্ঘমেয়াদী ভাবে সেবন মোটেই উচিৎ নয় ।
No comments:
Post a Comment