ডিসমেনোরিয়া ( Dysmenorrhea) হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাবের সময় হওয়া যন্ত্রনা ( গ্রীক শব্দ "ডিস" মানে হ'ল কষ্টকর, "মেন'" মানে হ'ল মাসিক ও "রিয়া" মানে হ'ল প্রবাহ ) -অর্থাৎ মাসিক শুরু হবার আগে বা মাসিক চলাকালীন সময়ে নারী যে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে থাকেন তাকে ডিসমেনেসিয়া বলে এবং ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্রনাও কমে যায় । সাধারনত যৌবন সুচনার ( বয়ঃসন্ধির ) পর থেকে ২০-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সাধারণত প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা এবং তীব্রতা কমে আসতে থাকে । ইহাই প্রকৃতির নিয়ম ।
কেন এই ব্যাথা হয় ? ( ফিজিওলজি অনুসারে ) ঃ

জরায়ুর U ভিতরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এফ-২ আলফা রস্টাল্ড নামক রাসায়নিক পদার্থ গুলির ক্রিয়ার ফলে জরায়ুর ভিতরের লাইনিং ছোট হয়ে যায় এবং প্রস্তুত হয় গর্ভধারণের জন্য , কিন্তু তা গর্ভসঞ্ছারিত না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত লাইনার গুলো প্রসারিত না হয় ততক্ষন জরায়ুর মাংসপেশীর সংকোচিত থাকে এবং জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় । মুলত সে কারনেই মাসিকের রক্তস্রাবের সাথে যন্ত্রনা হয়ে থাকে ।
যন্ত্রনা বেশী হয় কেন ? যাদের ক্ষেত্রে এই সব রাসায়নিক পদার্থ হয় বেশি পরিমাণে নির্গত হয় অথবা মহিলার প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল (sensitive )হয়ে তা হয়ে থাকে অথবা মস্তিষ্কের পিটুইটরি গ্রন্থি থেকে ভেসোপ্রসিন নামক হরমোন প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বেশী কাজ করে বিধায় যন্ত্রণা বেশী হয়ে থাকে ।
অন্য থিওরি মতে , জরায়ুর রক্তপ্রবাহ হ্রাস পেলে কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের উৎপত্তি হয় , যার ফলে টাইপ-সি যন্ত্রনার কোষসমূহ সক্রিয় হয়ে উঠে এবং সে কারনে ঠিক মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারেনা , এছাড়াও লিউকোট্রিন লিউট নামক অন্য একধরণের রাসায়নিক তত্ত্বের উৎপত্তির জন্যও ডিসমেনোরিয়া হয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ৷
ডিসমেনোরিয়া বা মাসিককালীন ব্যথা দু'প্রকার। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।

প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হল- এতে জরায়ুর অসুখ থাকেনা । মাসিক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা শুরু হয়ে ( ২-৩ দিন ব্যথা থাকে ) মসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় এবং ৯০% বেলায় বয়স ২০ এর উপরে চলে গেলে দৈহিক হরমোন চক্র সুন্দর একটা রুটিনে চলে আসে বিধায় তা খুব কম দেখা যায় । তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথাই বেশি দেখা যায় ।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হল - এতে জরায়ু , ডিম্বাশয় বা প্রজনন তন্ত্রের যে কোন একটা অসুখের লক্ষন এবং সেই অসুখ দূর হওয়া না পর্যন্ত সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বা দীর্ঘ স্থায়ী মাসিক ব্যাথা থাকবেই । তৃতীয় বিশ্বে ৭০% মহিলাদের সন্তান প্রসবের পর মেয়েদের প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশনের কারণকে বেশি দায়ি করা হয় । ১৯% মহিলাদের বেলায় জরায়ুর ফাইব্রয়েড, অ্যান্ডোমেট্রিওসিস , অ্যাডেনোমায়োসিস , যৌন জীবাণুর ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া লেগে থাকতে দেখা যায় - তবে অসুখের কারনে হলে মাসিক জনিত ব্যাথা ৭/৯ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে ।
কারণ ঃ

মানশিক ( যারা মানসিক দিক থেকে খুবি স্পর্শ কাতর বা ভাব প্রবণতা বেশি তারা এমনিতেই যন্ত্রণা একটু বেশী অনুভব করা স্বাভাবিক )
পরিবেশগত অজ্ঞতা অথবা বংশগত ( মায়ের হলে মেয়ের , বিশেষ করে মা বাবার আদরের মেয়েদের বেলায় একটু বেশী অথবা পারিবারিক ভাবে বেশী অবহেলিত মেয়েরা গড়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে )
- মহিলা হরমোনের ভারসাম্য হীনতা ( ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন ) অথবা প্রজেস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়া - যে কোন কারনে জরায়ুর মধ্যে স্রাবের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে অথবা গর্ভপাত করালে - রক্তস্বল্পতা অথবা স্থুলতা ইত্যাদি কারনে প্রাইমারী মাসিক জনিত ব্যাথা প্রতিটা চক্রেই কম বেশী দেখা দিতে পারে ।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার প্রধান কারন ঃ ( সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া সাধারণতে ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হতে দেখা যায় )

যৌন জীবাণুর ইনফেকশন , এন্ডোমেট্রিওসিস Endometriosis : ( এক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুসহ ফেলোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় এবং পেল্ভিসে চলে আসে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে ) - ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস - Uterine fibroids : ( এই অবস্থায় জরায়ুর গাত্রে টিস্যু একত্রিত হয়ে পিন্ড সৃষ্টি করে। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পিন্ড থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় না ) এডেনোমায়োসিস Adenomyosis :( এই অবস্থায় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুর পেশিবহুল দেয়ালে বৃদ্ধি পেতে থাকে ) - পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ Pelvic inflammatory disease (পি-আই-ডি) ( এটি মহিলাদের জননাঙ্গের একটি ইনফেকশন যা সাধারনত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে ) সারভিকাল স্টেনোসিস Cervical stenosis : ( জরায়ুর মুখ ছোট হলে তা মাসিকের রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং জরায়ুতে চাপের সৃষ্টি করে ও ব্যথা হয় ) - ওভারিয়ান সিস্ট (ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা পানি বা তরলভর্তি থলি ) - পেলভিক টিউবারকুলোসিস ( টিবি ) ভলভোডাইনিয়া, অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভপাত ইত্যাদি কারন সমুহ বেশী দায়ী । সাথে আনুসঙ্গিক অন্যান্য লক্ষণ বিদ্যমান থাকবে । যেমন , - মাসিক অনিয়মিত হওয়া, মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া , মাসিকের মধ্যে কয়েকবার রক্তস্রাব হওয়া, যোনিদ্বার দিয়ে স্রাব নির্গত হওয়া, যৌন ক্রিয়াতে কষ্ট অনুভব করা ইত্যাদি ।
লক্ষণ :

মাসিক স্রাবের প্রথম দিনে তীব্র ব্যথা হয়। এটি খিঁচুনী ব্যথার মতো থেমে থেমে আসে অথবা অবিরাম থাকে। ব্যথা ২/৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। । ব্যাথার তীব্রতা কখনও খুব বেশী হতে পারে । যেমন, তলপেটে ও দুই উরুর সামনের দিকে ও ভেতরের দিকে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে, কখনও কোমরেও ব্যথ অনুভুত হয়। ব্যথার সাথে বমি ভাব বা বমি হতে পারে মাথা ব্যথা সহ শারীরিক অস্বস্থি বোধ হতে পারে । কখনও কখনও পাতলা পায়খানা, পায়খানার রাস্তায় চাপানুভুতি হওয়া । টেনশনে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে। কখনও স্তনেও ব্যথা হতে পারে। রোগী বেশী দূর্বল হয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। কামড়ানো ধরার মত ব্যাথা হলে ঋতুস্রাবে রক্তের পরিমাণ খুবই অল্প হতে পারে অথবা কার ও বেলায় দীর্ঘায়িত মাসিক হতে পারে । সেই সাথে অনিদ্রা, অস্বস্তি, যোনীপথে চুলকানি , যোনী দিয়ে রক্তের সাথে স্রাবের পরিমান বেশী নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন থাকতে পারে ।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হলে জরায়ু বা জনন তন্ত্রের যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের লক্ষন সহ উপরের লক্ষন সমুহ বিদ্যমান থাকতে দেখা যায় ।
রোগনির্ণয় ঃ

প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ায় শারীরিক পরীক্ষায় বা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না। রোগের উপসর্গের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে সাধারণত তার ওপর নির্ভর করেই প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া ডায়াগনোসিস করা হয় বা ৯৯% ক্ষেত্রে কোন পরিক্ষার প্রয়োজন হয়না -
যেমন : প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়াতে ব্যথা মাসিক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে শুরু হয়ে ১২-৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকে না - ফাইব্রয়েডের জন্য ব্যথা হলে সেটা মাসিকের প্রথম ২-৩ দিন থাকে, এরপর আর থাকে না তবে প্রত্যেক মাসিকের সময় ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। এন্ড্রোমেট্রিয়সিস ও এডিনোমায়োসিসের ক্ষেত্রে মাসিকের ২-৩ দিন আগে ব্যথা শুরু হয়ে মাসিকের সময় ব্যথা তীব্র হয় এবং মাসিকের পরও এই ব্যথা কিছু কিছু থেকেই যায়। জরায়ুর ইনফেকশনের (পিআইডি) ব্যথা মাসিকের ২-৩ দিন আগে শুরু হয় এবং মাসিক শুরু হলে ব্যথা চলে যায়। এক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে।
সে জন্য সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বলে সন্দেহ হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি পরীক্ষার আবশ্যকতা হতে পারে ৷ সেইগুলি হ'ল রক্তের টি সি, ডি সি , ই এস আর,হিমোগ্লবিন, ভি ডি আর এল; ভেজাইনাল স্রাব পরীক্ষা; প্রসাব পরীক্ষা; হিষ্ট-সালফিংগোগ্রাম এক্সরে; পেটের আলট্রাসাউন্ড; এন্ডোমেট্রিয় বায়প্সি; লেপ্রোস্কপিক পরীক্ষা ইত্যাদি রোগের ধরনের উপর চিকিৎসকরা পরীক্ষার জন্য বলতে পারেন ।
চিকিৎসা ঃ

প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন ঔষধের প্রয়োজন নাই , তবে যদি ব্যাথা বেশী হয় তাহলে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বিরোধী NonAnt InflammatoD NI বেশিরভাগ রোগীর ব্যাথা দূর করে ৷
নেপ্রস্কেন, আইব্রুপ্রফেন,কিটোপ্রফেন,মেফেনেমিক এসিড,ডাইক্লফেনেক ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পড়ে। এমন ওষুধসমূহ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বাধা দেয়ার ফলে রোগীর ব্যাথা নিয়ত্রনে আসে ৷ সাধারণত এইরকম যে কোনো একধরণের ঔষধ তিন মাসিক চক্রের জন্য খেতে বলা হয় ৷ যন্ত্রনা অনুভব হওয়ার সাথে সাথে ওষুধগুলি আরম্ভ করে মাসিক চলতে থাকা দিনকয়টিতে খেতে হয় ৷ ( মনে রাখবেন এই সব ঔষধ খালি পেটে সেবন অথবা বেশী সেবনে এসিডিটি,গেষ্ট্রাইটিস, হেমাটোমেসিস ইত্যাদি হতে পারে- তবে রিফক্সিক্যাব জাতিয় গ্রোফের ড্রাগস পাকস্থলীর প্রদাহ জাতীয় সমস্যা কম তৈরি করে Cyclooxygenase-2 ( rofecoxib, Vioxx - Tablets: 12.5 mg, 25 mg, and 50mg. Oral Suspension: 12.5 mg/5 mland 25mg/5ml )
(http://www.medicinenet.com/rofecoxib/page3.htm )
৩ মাসিক চক্রের পর ও যদি মাসিক চক্রের ব্যাথা না কমে এবং মহিলা হরমোন ভারসাম্য জনিত কারনে মনে হয় তাহলে চিকিৎসকরা মহিলা হরমোন অথবা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ ( জন্ম নিয়ত্রন বড়ি,যেমন মন্টলুকাস ইত্যাদি ) ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র নিয়মিত সেবনে মাসিক চক্রের ব্যাথা আর থাকার কথা নয় । ( ইষ্ট্রজেন ও প্রজেষ্টরন হরমোন মিলিত থাকার ফলে এটি সেবনে ডিম্বকোষ থেকে ডিম্ব প্রস্ফুটিত হয় না বিধায় যন্ত্রনা অনুভব করে না ৷ অর্থাৎ ওভুলেশন (Ovulation) রোধ করলে মাসিকের যন্ত্রনা হয় না । যদি মাসিক স্রাবের সময় রক্ত বেশি যায় তাহলে ওষুধের পাশাপাশি আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাবার বেশি খেতে হবে এবং একি সাথে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ।
রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মাল্টিভিটামিন ভিটামিন সমূহের মধ্যে একমাত্র ভিটামিন ই ছাড়া মাসিক চক্রের ব্যাথা কমার তেমন কোন প্রমান অন্যান্য ভিটামিন সমুহের নাই ( ভিটামিন ই জরায়ুর সঙ্কোচন সৃষ্টিকারী প্রোস্টাগ্লান্ডিন তৈরি কমিয়ে দিয়ে প্রসারণকারী প্রোস্টাসাইক্লিন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যথা কমে যায় , ৫০০ আই ইউ ভিটামিন ই মাসিকের ২ দিন আগ থেকে মোট ৫ দিন প্রতি মাসিক চক্রের সময় সেবনের পরামর্শ দেওা হয় ) । সে কারনে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার অথবা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন ।
গবেষণা ঃ
যারা কোন ঔষধ সেবন করতে আগ্রহী নয় সে ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ৩ মাসিক চক্রের সময় তিন বার আকুপাংচার করাতে পারলে ২ বছর পর্যন্ত মাসিক জনিত ব্যাথা ( ডিসমেনোরিয়া ) প্রতিরোধ করা সম্বভ ( রিসার্চ )
কিভাবে নিজে নিজে আকুপ্রেসারের মাধ্যমে মাসিক জনিত ব্যাথা সাময়িক নিয়ত্রন করবেন ঃ ( ছবি দেখে মিলিয়ে নিন )





পায়ের ঘন্টা থেকে ২ ইঞ্চি উপরের মধ্যবর্তী স্থান সমুহে এল্টি আঙুলের মাথা দিয়ে ( ভাল হবে ছোট স্ট্রিকার জাতীয় কিছু রেখে চাপ দেওয়া ) চাপ দিয়ে ধরুন এবং যেখানে আঙ্গুলের মাতার চাপের কারনে একটু বেশি ব্যাথা যুক্ত মনে করবেন সেখানে এক মিনিট করে ৩ বার তিন মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখুন -একি ভাবে ছবিতে নিচ পেটে যে ৬ টি পয়েন্ট দেখানো হয়েছে সেখানে ও আঙুলের মাতা দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন এক মিনিট করে দেখবেন মাসিক জনিত ব্যাথা প্রায় কমে গেছে এবং এভাবে যে কয়দিন ব্যাথা থাকবে ( ৫ দিন ) প্রতিদিন একবার করে করতে থাকুন । গবেশনা অনুসারে ৬৭% বেলায় পরবর্তীতে মাসিক জনিত ব্যাথা আর থাকার কথা নয় ।
একজন আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ চাইলে উক্ত এস পি৬ ( SP6 ) পয়েন্টে ভিটামিন কে-১ ইনজেকশন প্রয়োগ করে ২ মিনিটের ভিতর ব্যাথা কমিয়ে দিতে পারেন বা মাসিক জনিত প্রবল ব্যাথায় মাত্র দুই মিনিটের ভিতর বেশ ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং একি ভাবে মাসিক জনিত ব্যাথায় কার্যকর আকুপাংচার পয়েন্ট সমুহে যথা যত ভাবে প্রয়োগ করলে মাত্র ৩ দিনের চিকিৎসায় পুরন মাসিক জনিত ব্যাথা চিরস্থায়ী নির্মূল করা সম্বভ । মাসিক ব্যাথার জন্য কার্যকর পয়েন্ট গুলো হছছে ঃ SP6 + CV4 (Guanyuan) + SP10 (Xuehai) + K3 (Taixi) + SP8 (Diji) ---- রিসার্চ ফর্ম ন্যাশনাল কম্বাইন্ড থ্যারাপি ইউকে এবং UCSF ( ডঃ হেলাল )
আর ও বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্লিক করুন ( http://www.osher.ucsf.edu/wp-content/uploads/2014/11/VitaminKAcupoint_Dysmenorrhea.pdf )
বিয়ে হলেই কি ডিসমেনোরিয়া কমে যায় ?
মুলত বিয়ে হলে ব্যাথা কমে যায় তা সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে বিয়ে করার পর গর্ভধারণ করলে ডিসমেনোরিয়া ৯০% বেলায় সেরে যায় তা সত্য । কারন হিসাবে দেখা যায় জরায়ুতে সন্তান ধারন করার ফলে নর্মাল সন্তান প্রসবের ফলে পরবর্তীতে মাসিক স্রাবের সময় প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন নিঃসরণ কমে যায় বলে মনে করা হয়, যা ডিসমেনোরিয়া সারানোতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের ফলে জরায়ু মুখ প্রশস্ত হয়। এতে মাসিক স্রাব দ্রুত ও সহজে বেরিয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা অনুভূতি বহনকারী স্নায়ুর সংবেদনশীলতা কমে যায় বিধায় ডিসমেনোরিয়া নিরাময়ে সহায়ক বলে অনেকটা প্রমানিত ।
বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , গরম স্যাঁক ইত্যাদি করলে সাময়িক কিছুটা আরাম বোধ হতে পারে । ওজন বেশি মনে করলে তা ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধমে কমাতে হবে।
সেকেন্ডারি ক্ষেত্রে কি কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে এবং সে কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে । তবে অবশ্যই তার সাথে যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের পুরন লক্ষন বিদ্দমান থাকবেই ।
ধন্যবাদ --------------------------------------