shaharpar

Monday, 13 February 2017

ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) স্ত্রীরোগ ( ৪র্থ পর্ব ) Dr.H.Kamaly







ডিসমেনোরিয়া ( Dysmenorrhea) হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাবের সময় হওয়া যন্ত্রনা ( গ্রীক শব্দ "ডিস" মানে হ'ল কষ্টকর, "মেন'" মানে হ'ল মাসিক ও "রিয়া" মানে হ'ল প্রবাহ ) -অর্থাৎ মাসিক শুরু হবার আগে বা মাসিক চলাকালীন সময়ে নারী যে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে থাকেন তাকে ডিসমেনেসিয়া বলে এবং ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্রনাও কমে যায় । সাধারনত যৌবন সুচনার ( বয়ঃসন্ধির ) পর থেকে ২০-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সাধারণত প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা এবং তীব্রতা কমে আসতে থাকে । ইহাই প্রকৃতির নিয়ম ।


কেন এই ব্যাথা হয় ? ( ফিজিওলজি অনুসারে ) ঃ
dys-03
জরায়ুর U ভিতরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এফ-২ আলফা রস্টাল্ড নামক রাসায়নিক পদার্থ গুলির ক্রিয়ার ফলে জরায়ুর ভিতরের লাইনিং ছোট হয়ে যায় এবং প্রস্তুত হয় গর্ভধারণের জন্য , কিন্তু তা গর্ভসঞ্ছারিত না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত লাইনার গুলো প্রসারিত না হয় ততক্ষন জরায়ুর মাংসপেশীর সংকোচিত থাকে এবং জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় । মুলত সে কারনেই মাসিকের রক্তস্রাবের সাথে যন্ত্রনা হয়ে থাকে ।

যন্ত্রনা বেশী হয় কেন ? যাদের ক্ষেত্রে এই সব রাসায়নিক পদার্থ হয় বেশি পরিমাণে নির্গত হয় অথবা মহিলার প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল (sensitive )হয়ে তা হয়ে থাকে অথবা মস্তিষ্কের পিটুইটরি গ্রন্থি থেকে ভেসোপ্রসিন নামক হরমোন প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বেশী কাজ করে বিধায় যন্ত্রণা বেশী হয়ে থাকে ।
অন্য থিওরি মতে , জরায়ুর রক্তপ্রবাহ হ্রাস পেলে কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের উৎপত্তি হয় , যার ফলে টাইপ-সি যন্ত্রনার কোষসমূহ সক্রিয় হয়ে উঠে এবং সে কারনে ঠিক মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারেনা , এছাড়াও লিউকোট্রিন লিউট নামক অন্য একধরণের রাসায়নিক তত্ত্বের উৎপত্তির জন্যও ডিসমেনোরিয়া হয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ৷



ডিসমেনোরিয়া বা মাসিককালীন ব্যথা দু'প্রকার। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।
dys-04

প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হল- এতে জরায়ুর অসুখ থাকেনা । মাসিক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা শুরু হয়ে ( ২-৩ দিন ব্যথা থাকে ) মসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় এবং ৯০% বেলায় বয়স ২০ এর উপরে চলে গেলে দৈহিক হরমোন চক্র সুন্দর একটা রুটিনে চলে আসে বিধায় তা খুব কম দেখা যায় । তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথাই বেশি দেখা যায় ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হল - এতে জরায়ু , ডিম্বাশয় বা প্রজনন তন্ত্রের যে কোন একটা অসুখের লক্ষন এবং সেই অসুখ দূর হওয়া না পর্যন্ত সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বা দীর্ঘ স্থায়ী মাসিক ব্যাথা থাকবেই । তৃতীয় বিশ্বে ৭০% মহিলাদের সন্তান প্রসবের পর মেয়েদের প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশনের কারণকে বেশি দায়ি করা হয় । ১৯% মহিলাদের বেলায় জরায়ুর ফাইব্রয়েড, অ্যান্ডোমেট্রিওসিস , অ্যাডেনোমায়োসিস , যৌন জীবাণুর ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া লেগে থাকতে দেখা যায় - তবে অসুখের কারনে হলে মাসিক জনিত ব্যাথা ৭/৯ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে ।


কারণ ঃ
dys-06
মানশিক ( যারা মানসিক দিক থেকে খুবি স্পর্শ কাতর বা ভাব প্রবণতা বেশি তারা এমনিতেই যন্ত্রণা একটু বেশী অনুভব করা স্বাভাবিক )

পরিবেশগত অজ্ঞতা অথবা বংশগত ( মায়ের হলে মেয়ের , বিশেষ করে মা বাবার আদরের মেয়েদের বেলায় একটু বেশী অথবা পারিবারিক ভাবে বেশী অবহেলিত মেয়েরা গড়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে )
- মহিলা হরমোনের ভারসাম্য হীনতা ( ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন ) অথবা প্রজেস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়া - যে কোন কারনে জরায়ুর মধ্যে স্রাবের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে অথবা গর্ভপাত করালে - রক্তস্বল্পতা অথবা স্থুলতা ইত্যাদি কারনে প্রাইমারী মাসিক জনিত ব্যাথা প্রতিটা চক্রেই কম বেশী দেখা দিতে পারে ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার প্রধান কারন ঃ ( সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া সাধারণতে ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হতে দেখা যায় )
dys-07
যৌন জীবাণুর ইনফেকশন , এন্ডোমেট্রিওসিস Endometriosis : ( এক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুসহ ফেলোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় এবং পেল্ভিসে চলে আসে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে ) - ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস - Uterine fibroids : ( এই অবস্থায় জরায়ুর গাত্রে টিস্যু একত্রিত হয়ে পিন্ড সৃষ্টি করে। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পিন্ড থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় না ) এডেনোমায়োসিস Adenomyosis :( এই অবস্থায় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুর পেশিবহুল দেয়ালে বৃদ্ধি পেতে থাকে ) - পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ Pelvic inflammatory disease (পি-আই-ডি) ( এটি মহিলাদের জননাঙ্গের একটি ইনফেকশন যা সাধারনত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে ) সারভিকাল স্টেনোসিস Cervical stenosis : ( জরায়ুর মুখ ছোট হলে তা মাসিকের রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং জরায়ুতে চাপের সৃষ্টি করে ও ব্যথা হয় ) - ওভারিয়ান সিস্ট (ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা পানি বা তরলভর্তি থলি ) - পেলভিক টিউবারকুলোসিস ( টিবি ) ভলভোডাইনিয়া, অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভপাত ইত্যাদি কারন সমুহ বেশী দায়ী । সাথে আনুসঙ্গিক অন্যান্য লক্ষণ বিদ্যমান থাকবে । যেমন , - মাসিক অনিয়মিত হওয়া, মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া , মাসিকের মধ্যে কয়েকবার রক্তস্রাব হওয়া, যোনিদ্বার দিয়ে স্রাব নির্গত হওয়া, যৌন ক্রিয়াতে কষ্ট অনুভব করা ইত্যাদি ।



লক্ষণ :
dys-010
মাসিক স্রাবের প্রথম দিনে তীব্র ব্যথা হয়। এটি খিঁচুনী ব্যথার মতো থেমে থেমে আসে অথবা অবিরাম থাকে। ব্যথা ২/৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। । ব্যাথার তীব্রতা কখনও খুব বেশী হতে পারে । যেমন, তলপেটে ও দুই উরুর সামনের দিকে ও ভেতরের দিকে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে, কখনও কোমরেও ব্যথ অনুভুত হয়। ব্যথার সাথে বমি ভাব বা বমি হতে পারে মাথা ব্যথা সহ শারীরিক অস্বস্থি বোধ হতে পারে । কখনও কখনও পাতলা পায়খানা, পায়খানার রাস্তায় চাপানুভুতি হওয়া । টেনশনে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে। কখনও স্তনেও ব্যথা হতে পারে। রোগী বেশী দূর্বল হয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। কামড়ানো ধরার মত ব্যাথা হলে ঋতুস্রাবে রক্তের পরিমাণ খুবই অল্প হতে পারে অথবা কার ও বেলায় দীর্ঘায়িত মাসিক হতে পারে । সেই সাথে অনিদ্রা, অস্বস্তি, যোনীপথে চুলকানি , যোনী দিয়ে রক্তের সাথে স্রাবের পরিমান বেশী নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন থাকতে পারে ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হলে জরায়ু বা জনন তন্ত্রের যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের লক্ষন সহ উপরের লক্ষন সমুহ বিদ্যমান থাকতে দেখা যায় ।






রোগনির্ণয় ঃ
dys-011
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ায় শারীরিক পরীক্ষায় বা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না। রোগের উপসর্গের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে সাধারণত তার ওপর নির্ভর করেই প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া ডায়াগনোসিস করা হয় বা ৯৯% ক্ষেত্রে কোন পরিক্ষার প্রয়োজন হয়না -

যেমন : প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়াতে ব্যথা মাসিক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে শুরু হয়ে ১২-৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকে না - ফাইব্রয়েডের জন্য ব্যথা হলে সেটা মাসিকের প্রথম ২-৩ দিন থাকে, এরপর আর থাকে না তবে প্রত্যেক মাসিকের সময় ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। এন্ড্রোমেট্রিয়সিস ও এডিনোমায়োসিসের ক্ষেত্রে মাসিকের ২-৩ দিন আগে ব্যথা শুরু হয়ে মাসিকের সময় ব্যথা তীব্র হয় এবং মাসিকের পরও এই ব্যথা কিছু কিছু থেকেই যায়। জরায়ুর ইনফেকশনের (পিআইডি) ব্যথা মাসিকের ২-৩ দিন আগে শুরু হয় এবং মাসিক শুরু হলে ব্যথা চলে যায়। এক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে।

সে জন্য সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বলে সন্দেহ হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি পরীক্ষার আবশ্যকতা হতে পারে ৷ সেইগুলি হ'ল রক্তের টি সি, ডি সি , ই এস আর,হিমোগ্লবিন, ভি ডি আর এল; ভেজাইনাল স্রাব পরীক্ষা; প্রসাব পরীক্ষা; হিষ্ট-সালফিংগোগ্রাম এক্সরে; পেটের আলট্রাসাউন্ড; এন্ডোমেট্রিয় বায়প্সি; লেপ্রোস্কপিক পরীক্ষা ইত্যাদি রোগের ধরনের উপর চিকিৎসকরা পরীক্ষার জন্য বলতে পারেন ।




চিকিৎসা ঃ
dys-012
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন ঔষধের প্রয়োজন নাই , তবে যদি ব্যাথা বেশী হয় তাহলে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বিরোধী NonAnt InflammatoD NI বেশিরভাগ রোগীর ব্যাথা দূর করে ৷

 নেপ্রস্কেন, আইব্রুপ্রফেন,কিটোপ্রফেন,মেফেনেমিক এসিড,ডাইক্লফেনেক ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পড়ে। এমন ওষুধসমূহ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বাধা দেয়ার ফলে রোগীর ব্যাথা নিয়ত্রনে আসে ৷ সাধারণত এইরকম যে কোনো একধরণের ঔষধ তিন মাসিক চক্রের জন্য খেতে বলা হয় ৷ যন্ত্রনা অনুভব হওয়ার সাথে সাথে ওষুধগুলি আরম্ভ করে মাসিক চলতে থাকা দিনকয়টিতে খেতে হয় ৷ ( মনে রাখবেন এই সব ঔষধ খালি পেটে সেবন অথবা বেশী সেবনে এসিডিটি,গেষ্ট্রাইটিস, হেমাটোমেসিস ইত্যাদি হতে পারে- তবে রিফক্সিক্যাব জাতিয় গ্রোফের ড্রাগস পাকস্থলীর প্রদাহ জাতীয় সমস্যা কম তৈরি করে Cyclooxygenase-2 ( rofecoxib, Vioxx - Tablets: 12.5 mg, 25 mg, and 50mg. Oral Suspension: 12.5 mg/5 mland 25mg/5ml )
(http://www.medicinenet.com/rofecoxib/page3.htm )


৩ মাসিক চক্রের পর ও যদি মাসিক চক্রের ব্যাথা না কমে এবং মহিলা হরমোন ভারসাম্য জনিত কারনে মনে হয় তাহলে চিকিৎসকরা মহিলা হরমোন অথবা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ ( জন্ম নিয়ত্রন বড়ি,যেমন মন্টলুকাস ইত্যাদি ) ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র নিয়মিত সেবনে মাসিক চক্রের ব্যাথা আর থাকার কথা নয় । ( ইষ্ট্রজেন ও প্রজেষ্টরন হরমোন মিলিত থাকার ফলে এটি সেবনে ডিম্বকোষ থেকে ডিম্ব প্রস্ফুটিত হয় না বিধায় যন্ত্রনা অনুভব করে না ৷ অর্থাৎ ওভুলেশন (Ovulation) রোধ করলে মাসিকের যন্ত্রনা হয় না । যদি মাসিক স্রাবের সময় রক্ত বেশি যায় তাহলে ওষুধের পাশাপাশি আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাবার বেশি খেতে হবে এবং একি সাথে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ।

রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মাল্টিভিটামিন ভিটামিন সমূহের মধ্যে একমাত্র ভিটামিন ই ছাড়া মাসিক চক্রের ব্যাথা কমার তেমন কোন প্রমান অন্যান্য ভিটামিন সমুহের নাই ( ভিটামিন ই জরায়ুর সঙ্কোচন সৃষ্টিকারী প্রোস্টাগ্লান্ডিন তৈরি কমিয়ে দিয়ে প্রসারণকারী প্রোস্টাসাইক্লিন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যথা কমে যায় , ৫০০ আই ইউ ভিটামিন ই মাসিকের ২ দিন আগ থেকে মোট ৫ দিন প্রতি মাসিক চক্রের সময় সেবনের পরামর্শ দেওা হয় ) । সে কারনে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার অথবা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন ।



গবেষণা ঃ  
যারা কোন ঔষধ সেবন করতে আগ্রহী নয় সে ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ৩ মাসিক চক্রের সময় তিন বার আকুপাংচার করাতে পারলে ২ বছর পর্যন্ত মাসিক জনিত ব্যাথা ( ডিসমেনোরিয়া ) প্রতিরোধ করা সম্বভ ( রিসার্চ )


কিভাবে নিজে নিজে আকুপ্রেসারের মাধ্যমে মাসিক জনিত ব্যাথা সাময়িক নিয়ত্রন করবেন ঃ ( ছবি দেখে মিলিয়ে নিন )
dys-2dys-8
dys-3dys-9dys-013
পায়ের ঘন্টা থেকে ২ ইঞ্চি উপরের মধ্যবর্তী স্থান সমুহে এল্টি আঙুলের মাথা দিয়ে ( ভাল হবে ছোট স্ট্রিকার জাতীয় কিছু রেখে চাপ দেওয়া ) চাপ দিয়ে ধরুন এবং যেখানে আঙ্গুলের মাতার চাপের কারনে একটু বেশি ব্যাথা যুক্ত মনে করবেন সেখানে এক মিনিট করে ৩ বার তিন মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখুন -একি ভাবে ছবিতে নিচ পেটে যে ৬ টি পয়েন্ট দেখানো হয়েছে সেখানে ও আঙুলের মাতা দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন এক মিনিট করে দেখবেন মাসিক জনিত ব্যাথা প্রায় কমে গেছে এবং এভাবে যে কয়দিন ব্যাথা থাকবে ( ৫ দিন ) প্রতিদিন একবার করে করতে থাকুন । গবেশনা অনুসারে ৬৭% বেলায় পরবর্তীতে মাসিক জনিত ব্যাথা আর থাকার কথা নয় ।




একজন আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ চাইলে উক্ত এস পি৬ ( SP6 ) পয়েন্টে ভিটামিন কে-১ ইনজেকশন প্রয়োগ করে ২ মিনিটের ভিতর ব্যাথা কমিয়ে দিতে পারেন বা মাসিক জনিত প্রবল ব্যাথায় মাত্র দুই মিনিটের ভিতর বেশ ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং একি ভাবে মাসিক জনিত ব্যাথায় কার্যকর আকুপাংচার পয়েন্ট সমুহে যথা যত ভাবে প্রয়োগ করলে মাত্র ৩ দিনের চিকিৎসায় পুরন মাসিক জনিত ব্যাথা চিরস্থায়ী নির্মূল করা সম্বভ । মাসিক ব্যাথার জন্য কার্যকর পয়েন্ট গুলো হছছে ঃ SP6 + CV4 (Guanyuan) + SP10 (Xuehai) + K3 (Taixi) + SP8 (Diji) ---- রিসার্চ ফর্ম ন্যাশনাল কম্বাইন্ড থ্যারাপি ইউকে এবং UCSF ( ডঃ হেলাল )
আর ও বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্লিক করুন ( http://www.osher.ucsf.edu/wp-content/uploads/2014/11/VitaminKAcupoint_Dysmenorrhea.pdf )




বিয়ে হলেই কি ডিসমেনোরিয়া কমে যায় ?

মুলত বিয়ে হলে ব্যাথা কমে যায় তা সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে বিয়ে করার পর গর্ভধারণ করলে ডিসমেনোরিয়া ৯০% বেলায় সেরে যায় তা সত্য । কারন হিসাবে দেখা যায় জরায়ুতে সন্তান ধারন করার ফলে নর্মাল সন্তান প্রসবের ফলে পরবর্তীতে মাসিক স্রাবের সময় প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন নিঃসরণ কমে যায় বলে মনে করা হয়, যা ডিসমেনোরিয়া সারানোতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের ফলে জরায়ু মুখ প্রশস্ত হয়। এতে মাসিক স্রাব দ্রুত ও সহজে বেরিয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা অনুভূতি বহনকারী স্নায়ুর সংবেদনশীলতা কমে যায় বিধায় ডিসমেনোরিয়া নিরাময়ে সহায়ক বলে অনেকটা প্রমানিত ।

বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , গরম স্যাঁক ইত্যাদি করলে সাময়িক কিছুটা আরাম বোধ হতে পারে । ওজন বেশি মনে করলে তা ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধমে কমাতে হবে।

সেকেন্ডারি ক্ষেত্রে কি কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে এবং সে কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে । তবে অবশ্যই তার সাথে যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের পুরন লক্ষন বিদ্দমান থাকবেই ।
ধন্যবাদ --------------------------------------

Created by Dr Helal Kamaly --

Supporting Research

Balbi C, Musone R, Menditto A, et al., Influence of menstrual factors and dietary habits on menstrual pain in adolescence age. Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2000;91(2):143-8.
Barnard ND, Scialli AR, Hurlock D, Bertron P. Diet and sex-hormone binding globulin, dysmenorrhea, and premenstrual symptoms. Obstet Gynecol. 2000;95(2):245-50.
Bernstein MT, Graff LA, Avery L, Palatnick C, Parnerowski K, Targownik LE. Gastrointestinal symptoms before and during menses in healthy women. BMC Womens Health. 2014;14:14.
Bope & Kellerman: Conn's Current Therapy 2013. 1st ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2012.
Chen YW, Wang HH. The effectiveness of acupressure on relieving pain: a systematic review. Pain Manag Nurs. 2014;15(2):539-50.
Dennehy CE. The use of herbs and dietary supplements in gynecology: an evidence-based review. J Midwifery Womens Health. 2006;51(6):402-9.
Ferri: Ferri's Clinical Advisor 2016. Philadelphia, PA: Elsevier; 2016.
Fjerbaek A, Knudsen UB. Endometriosis, dysmenorrhea and diet -- what is the evidence? Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2007;132(2):140-7.
Ghodsi Z, Asltoghiri M. The effect of fennel on pain quality, symptoms, and menstrual duration in primary dysmenorrhea. J Pediatr Adolesc Gynecol. 2014;27(5):283-6.
Grimes DA, Hubacher D, Lopez LM, Schulz KF. Non-steroidal anti-inflammatory drugs for heavy bleeding or pain associated with intrauterine-device use. Cochrane Database Syst Rev. 2006;(4):CD006034.
Guerrera MP, Volpe SL, Mao JJ. Therapeutic uses of magnesium. Am Fam Physician. 2009 Jul 15;80(2):157-62. Review.

Tuesday, 7 February 2017

মাসিক পূর্ব সিনড্রম (PMS ) স্ত্রীরোগ ( ৩য় পর্ব ) Dr.H.Kamaly

মাসিক পূর্ব সিনড্রম (PMS ) স্ত্রীরোগ

 ( ৩য় পর্ব - Dr.H.Kamaly )


 
 
 
 
 
 
3 Votes

মাসিক শুরু হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে যে শারীরিক, মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় , তাকেই মাসিক পূর্ব সিনড্রম বা PMS বলে । একি সাথে যদি মস্তিস্কের হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল অথবা সঠিক ভাবে কাজ না করে বরং মস্তিক্স থেকে সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বেশি হয় এবং সে কারনে মাসিক চক্রের প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় যে শারীরিক ও মানসিক অশান্তি বা পরিবর্তন দেখা দেয়, ইহাকে মাসিক পূর্ব ডিস্পরিক ডিসঅর্ডার বা পিএমডিডি ( PMDD) বলা হয় ( Premenstrual Dysphoric Dysorde ) ।


রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মহিলাদের মাসিক পূর্ব সিনড্রম এমন একটা অসুখ যার মুল কারন চিকিৎসকরা অনেক সময় বুঝে উঠা সম্বভ হয়না বিধায় লক্ষন অনুসারে ঔষধ সেবন করে অনেক রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্বভ হয়না ।

pm-7


কারন ঃ
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ৮৫ % বেলায় নিম্নের কারন ই বেশী দায়ী — এবং ফিজিওলজির সুত্র অনুসারে প্রধান কারনের মধ্যে ৩ টি কারন ই সবচেয়ে বেশী উল্লেখ যোগ্য ।

১- নারী হরমোনের ভারসাম্যতা জনিত কারন ঃ প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টারন দুটি হরমোনের মধ্যে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় প্রজেস্টারন হরমোনের মাত্রা একক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দেয় ( বিবাহিত ও মেনোপোজের কাছা কাছি বয়সের বেলায় বেলায় ৯৬% )

বিপরিত দিকে উক্ত মহিলা যদি অবিবাহিত ও বয়স ২০-৩০ এর ভিতরে থাকে তাহলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে –প্রজেস্টারন হরমোনের পরিমান শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে অথবা তা নিষ্ক্রিয় থাকে বিধায় বিধায় মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দিয়ে থাকে এবং সে সময় কারও কারও বেলায় সেক্রেটরি ফেইজ কে দিরঘায়িত করে , যেমন মাসিক চক্র ২১ দিনের পরিবর্তে তা ৫/৬ দিন দেরিতে হয়ে থাকে । ( মেডিক্যাল সাইন অনুসারে একে স্বাভাবিক মাসিক চক্র বলা যায় যদি রোগীর বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি থাকে )

গবেষণায় আর ও দেখানো হয়েছে এ ধরনের রোগিদের গর্ভ ধারন ( ডিম্ব নিশিক্তকরন ) করতে ও অনেক সময়ের প্রয়োজন ( পুরাতন রোগিদের বেলায় কম পক্ষে ৬ হতে ১১ টি মাসিক চক্রের অপেক্ষা করতে হয় ) তবে অবিবাহিতদের বেলায় সন্তান জন্ম দেওার পর তা আর থাকেনা যদি স্থায়ী ভাবে স্নায়ুবিক কোন অসুখের জন্ম বা হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা না থাকে । মুলত সে কারনেই মেজাজের পরিবর্তন , উদ্বেগ, এবং অস্বস্তিবোধ সহ ওভারিয়ান স্টেরয়েড জাতিয় সমস্যা লেগে থাকে – ডকুমেন্টারি তথ্য অনুসারে , ৯১% বেলায় পূর্বে যে কোন একসময় অনিয়মিত মাসিক চক্রের ইতিহাস দু একটা থাকবেই । ( R theory-Dr Helal) ।

২- হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারনে (HPA) ঃ হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেমের প্রধান কাজ হল , মস্তিস্কের সেরেবেলাম হতে নিউরোট্রান্সমিটার জনিত কারনে প্রজনন,মিজাজ বা আচরণ , যৌন আবেগ, হজম শক্তি, ইমিউনিটি শক্তি ইত্যাদি নিয়ত্রন করা -কিন্তু যদি কোন কারনে এই সিস্টেম সমুহ কাজ না করে অথবা দুর্বল বা নিষ্ক্রিয় থাকে তাহলে সঠিক ভাবে নারী হরমোনের ভারসাম্যতা রক্ষা করতে পারেনা বরং মস্তিক্সের সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বৃদ্ধি করে মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা প্রিম্যান্সট্রুয়েল ডিস্পরিক ডিসঅর্ডারে চলে যায় ( premenstrual dysphoric disorder (PMDD) ।

৩- ভিটামিন পুস্টিহিনতা এবং মানসিক ভারসাম্যতা ঃ গবেষণা অনুসারে ৭৩% বেলায় ভিটামিন বি-৬ এর মাত্রারিক্ত স্বল্পতা,রক্তশূন্যতা ( হিমোগ্লোবিউনের স্বল্পতা ) , মারাত্মক পুস্টিহিনতা ( ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন,ক্যালসিয়াম , জিঙ্ক ইত্যাদি খনিজ ) অথবা অনিয়ন্ত্রিত হজম শক্তি, লবণাক্ত খাবার , ক্যাপেইন জাতীয় পানি ( চা-কপি ) ইত্যাদি কারনেই হয়ে থাকে ।

এ ছাড়া ও – বংশগত – ( যেমন মায়ের হলে মেয়ের ও হতে পারে ), পারিবারিক সহিংসতা, ভ্যাক্টিম এবং রেপ, শারীরিক ও মানসিক আঘাত, অতিরিক্ত উদ্ধেগ , মানসিক চাপ এবং ক্লান্তি , সিজোপেনিয়া এবং বিপোলার সিন্ড্রেম, ,ডিসমেনোরিয়া, ওভারিয়ান সিনড্রম , থায়রয়েড জনিত সমস্যা , অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা (IBS), মাংশপেশি জনিত বাথ ব্যাধি ইত্যাদি কারনে হতে পারে ।



লক্ষন ঃ ( মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের লক্ষন প্রায় ২০০ অধিক )

pm-8
যদি নিম্নের লক্ষন সমুহের মধ্যে অন্তত ৫ টি লক্ষণ, মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৭ থেকে ১৩ দিন আগে দেখা দিলে অবশ্যই মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম বলতে পারেন । ( ৯০% বেলায় মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৫ দিন আগে দেখা দেয় আবার মাসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় )

শারীরিক উপসর্গ ( ফিজিক্যাল )
স্তন ফুলে যাওয়া এবং আবেগপ্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ও ব্যাথা অনুভব করা , পেটের গ্যস বৃদ্ধি সহ কোষ্ঠকাঠিন্য, বা ডায়রিয়া বা অনিয়ত্রিত পায়খানা হওয়া ,*.খাবারে রুচির পরিবর্তন হওয়া বিশেষত লবণ এবং চিনি একটু বেশী খাওয়ার ইছছা বেড়ে যাওয়া ,শরীরে রস জমে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ত্বকের সমস্যা (ব্রণ বৃদ্ধি ) , মাথা ব্যাথা এবং মাইগ্রেন (মাইগ্রেন PMS উপসর্গের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে), মাঝে মধ্যে অস্থিসন্ধি অথবা মাংসপেশীতে কামড়ানো থরপানো ইত্যাদি নানা ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে ।

মানসিক ও আচরণগত উপসর্গ
দুশ্চিন্তা ও উদ্বিগ্নতা, .বিষন্নতা, .হঠাৎ কেঁদে ফেলা, .মেজাজ উঠা-নামা করা ( ক্রোধান্বিত ও শত্রুতা বৃদ্ধি পাওয়া ) সেই সাথে তন্দ্রাভাব, ক্লান্তি, এবং শক্তির অভাব অনুভব করা .নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা হওয়া, .সামাজিক কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকা (Social withdrawn), ঠিক মত সব কিছুতে মনোযোগ না দেওয়া বা অনেক কিছু সঠিক ভাবে মনে রাখতে না পারা সহ যৌন আগ্রহ এবং ইচ্ছা পরিবর্তন ( বেশির ভাগ ক্ষেতে সহবাসের অনীহাই বেশী ) যা মাসিক চক্র শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় ।


পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ
pm-10
তেমন কোন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন নাই । তারপর ও অসুখটি মারাত্মক পর্যায়ের মনে করলে চিকিৎসকরা ২/৩ মাসিক চক্রের ইতিহাস, মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম চার্টের সাথে মিলিয়ে মহিলা হরমোন সেক্রেশন এনালাইসিস এবং অন্যান্য পুস্টি উপাদান জানার জন্য রক্ত পরীক্ষার কথা বলতে পারেন । চাইলে আপনি নিজে নিজেই সেই চার্টের সাথে নিজের অসুখের লক্ষন মিলিয়ে অসুখটি থেকে রেহাই পেতে পারেন , মনে রাখবেন চার্টের সাথে অন্তত ৫টি লক্ষনের মিল থাকতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে পিএম এস পজেটিভ ধরে নিতে পারেন ।


মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম কি কি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে ঃ
খাওয়া দাওয়া ও রুচির পরিবর্তন – রক্তশূন্যতা ( থায়রয়েড ডিসঅর্ডারের বেলায় হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা ) , ডায়াবেটিস, ওভারিয়ান সিস্ট বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরানো বা পরে যাওয়ার মত অবস্থা ( অথচ ব্লাড প্রেসার ঠিক মতই থাকে ) , জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবনে পার্স প্রতক্রিয়া ইত্যাদির সাথে যাদের বয়স একটু বেশী (৩৩ এর উপরে ) তাদের বেলায় স্থনে ব্যাথা, অনিদ্রা , বিনা কারনে মাথা ব্যাথা সহ মিজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন বেশী দেখা দেয় এবং গড়ে মাসিক চক্র শেষ হওয়ার পরের সপ্তাহ শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সবচেয়ে ভাল থাকে । গবেষণা অনুসারে দেখা যায় যারা পুরাতন মাসিক পূর্ব রোগী তাদের বেলায় মাইগ্রেন, হাঁপানি , ভায়েল সিন্ড্রোম, মৃগী রোগ ,multiple sclerosis ইত্যাদি থাকলে তা তখন খুব বেশী বৃদ্ধি পায় ।


চিকিৎসা ও ব্যাবস্থাপনা ঃ
pm-11
মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোমের বেলায় প্রথম স্থরে চিকিৎসার তেমন কোন প্রয়োজন হয়না যদি সঠিক পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে , আয়রন , ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি , ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬ জাতীয় খাবার একটু বেশী খেতে পারেন ( যেমন আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত )

সেই সাথে লবন চিনি, চা-কফির পরিমান একটু কম খাবেন ও প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক খাবার ( শসা ইত্যাদি ) বেশী খাবেন । মেজাজ পরিবর্তন এবং হতাশাগ্রস্থ মনে হলে নিজ ধর্মের কর্ম ( নামাজ/ উপশনা ) , সামাজিক ও পারিবারিক উপকৃত কাজে নিজকে জড়িয়ে রাখার চেস্টা করুন এবং সেই সাথে সকালে মর্নিং ওয়াক অথবা হাল্কা ব্যায়াম করার চেস্টা করুন । কোন অবস্থাতেই বিচানায় যাওয়ার পর বই পড়া, টিভি অথবা সে জাতীয় কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে । বিচানায় যাওয়ার পর উক্তেজক পানীয় ( চা-কফি ) পান না করা, বিবাহিত থাকলে নিয়মের অতিরিক্ত সহবাস ও অপ্রীতিকর সহবাস থেকে বিরত থাকা উচিৎ ।

রিসার্চ ঃ হরমোনের ভারসাম্যতাজনিত কারনে হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে মহিলা হরমোন ঔষধ সেবনে তা ঠিক হয়ে যায় অথবা পুনরায় সন্তান গ্রহন করলে তা আর থাকেনা ( যদি প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় অথবা অকার্যকর হয়ে থাকে ) অথবা যাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ইছছা না থাকে তারা নিউট্রেলাইজ জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করলে কিছুদিন ( ৩ মাসিক চক্র ) পর তা চলে যাওয়ার কথা ।

অবিবাহিতদের বেলায় সুষম খাদ্য গ্রহন সহ উক্তেজক বা ইমোশনাল কিছু করা থেকে বিরত থাকা ( বিশেষ করে রাতের বেলায় ) সহ রুটিন মাফিক দৈনিক লেখাপড়া অথবা ধর্ম কর্ম ( নামাজ / উপাসনা ) সহ পরবর্তী অথবা আগাম দিনের কর্মসূচী নিয়ে বাস্থবভিত্তিক চিন্তাভাবনায় ব্যাস্থ থাকা উচিৎ । তারপর ও যদি তা না সারে তাহলে ( কম্বাইন্ড ) নর্মাল জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ২৮ দিন সেবন করলে তা সেরে যাওয়ার কথা অথবা বিবাহ করার চিন্তা ভাবনা করতে পারেন । মনে রাখবেন যদি তা হরমোন প্রভাবে না হয়ে শারীরিক অন্য কোন কারনে হয়, ( যেমন থায়রয়েড হরমোনের অকার্যকরীতা , হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, নিউরোমাসুলার জাতীয় অসুখ ইত্যাদি ) তাহলে তা বিয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বিধায় মেনোপজের আগ পর্যন্ত সমস্যা সমুহ লেগে থাকতে পারে । ( বিস্তারিত পরবর্তী পরবে দেখুন )


সতর্কবাণী ঃ
মনে রাখবেন অভ্যাসগত কারনে মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম জাতীয় সমস্যার সৃষ্টি করলে পরবর্তীতে শত চেস্টা করেও শুধু ঔষধ দিয়ে তা নির্মূল করা সম্বভ হয়না ( মেডিক্যাল রিসার্চ ) যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ক্ষতিকারক অভ্যাস সমুহ দূর না করতে পারবেন ! এর জন্য চিকিৎসকদের কাছে না যাওয়াই ভাল । তবে শারীরিক সমস্যাজনিত কারনে অসুখটির সৃষ্টি হলে এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করলে ৯৫% বেলায় তা ভাল হওয়ার কথা, যদি ও এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ঔষধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে । ( ডাঃ হেলাল )

গ্রেড বি — অসুখের লক্ষন সমুহ যদি ৬ মাসিক চক্রের উপরে চলে যায় তাহলে নিম্নের ঔষধ সেবনের পরামর্ষ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা —-

চিকিৎসকের পরামর্ম অনুযায়ী ব্যাথা থাকলে ব্যাথা নাশক ব্যথা নাশক (Nonstcroidal anti-inflammatory) যেমন — ibuprofen (Motrin, Advil), indomethacin (Indocin) ketoprofen ইত্যাদি মসিক চক্রের ৭ দিন পূর্ব থেকে সেবন করতে হয় ৪ দিন । ( বিদ্রঃ দীর্ঘ দিন এ সব ঔষধ সেবন করলে পাকস্থলীর এসিড বৃদ্ধি সহ পাকস্থলীতে আলচার হতে পারে ) । অথবা যাদের হাইপার এসিডিটি হওয়ার সম্বাভনা তাদের বেলায় Tylenol গ্রোফের ঔষধ বা প্যারাসেটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন ।

দুশ্চিন্তা ও হতাশাগ্রস্থ মনে হলে বিষন্নতা রোধী (Antidepressants) ঔষধ যেমন Fluoxetine (Prozac, Sarafem, generic), Sertraline (Zoloft, generic), Paroxetine (Paxil, generic) মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ১৪ দিন আগ থেকে ৭/১২ দিনের জন্য সেবন করতে পারেন ( এই সব ঔষধ দীর্ঘদিন সেবনে অভ্যাসে পরিনত হওয়ার সম্বাভনা আছে বিধায় চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া একনাগাড়ে দীর্ঘ দিন সেবন করা ঠিক নয় । অথবা আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষে Disopan (Clonazepam – called anxiolytics) সেবন করতে পারেন ।


হরমোন জনিত ভারসাম্যতা অথবা নিষ্ক্রিয়তা হলে ঃ
হরমোন জনিত ভারসাম্যতা মনে করলে কোম্বাইন্ড জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ( ইস্ট্রোজেন ও প্রেজেস্টারন মিশ্রিত ) একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র সেবন করতে হয় – যদি হরমোন এনালাইসিস করে দেখা যায় প্রজেস্টারন হরমোন ঘাটতির কারনে মাসিক পূর্ব সিনড্রোম দেখা দিয়েছে তাহলে মিনি পিল বা প্রজেস্টারন জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করতে পারেন ।
৯৫% পি এম ডি ডি ( premenstrual dysmorphic disorder ) রোগীর বেলায় ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্যতার ফলে অসুখটি হয়ে থাকে তারপর ও যদি উক্ত মহিলা অবিবাহিত হয়ে থাকে তাহলে একক ভাবে তখন অতিরিক্ত যৌন কামনা বা অন্যান্য কারনে ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির ফলে প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় হতে পারে বিধায় বিশেষজ্ঞরা মিনি পিল সেবন করার পরামর্ষ দিতে পারেন ।

অথবা ইস্ট্রোজেন প্যাঁচ ( অর্থোইভরা ) বা ইনজেকশন গ্রহণ (Medroxy progesterone acetate ) প্রয়োগ করতে পারেন । ( বিদ্রঃ যাদের মেনোরেজিয়া বা অতিরিক্ত মাসিক স্রাব দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তাদের বেলায় এ জাতীয় ঔষধ সেবন করা ঠিক নয় ।

তৃতীয় স্থরের ক্ষেত্রে ঃ
গোনাড্রট্রপিন রিলিজিং হরমোন ঃ gonadotrophin-releasing hormone (GnRH)
নতুন ভাবে প্রমানিত leuprolide acetate ( Lupron / Zoladex নামে বাজারে এসেছে ) – ড্রাগসটি টেস্টারন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোন কে নিয়ত্রন করে বিধায় পি এম এস এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ফল দায়ক মনে করেন বিশেষজ্ঞরা – । ( যদিও ড্রাগসটি পুরাতন পুরাতন বয়ঃসন্ধি , ওভারিয়ান টিউমার, জরায়ুর টিস্যু বৃদ্ধি, ইত্যাদি অসুখের জন্য ইহা ব্যবাহার করা হয় ) ।

অথবা
নির্দিষ্ট কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে – বিশেষ করে মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ত্রিত মহিলা হরমোন জনিত কারনে হলে Danazol (Danocrine) ( ড্রাগসটি একধরনের রিফাইনিং পুরুষ হরমোন হিসাবে বিবেচিত এবং যাদের রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টারল তাদের ক্ষেত্রে  ব্যাবহার  নিষেধ ) বিশেষজ্ঞরা তা সেবনে ভাল ফলদায়ক হিসাবে মনে করেন ।



শরিরের স্থূলতার লক্ষন থাকলে ঃ pm-12
মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের সময় যাদের শরীর হঠাৎ স্ফিত অথবা ওজন বাড়ার মত মনে হয় সে ক্ষেত্রে সল্প মেয়াদী মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবন করা যেতে পারে যেমন , লেসিক্স ট্যাবলেট ইত্যাদি ।

লক্ষন হিসাবে যদি দেখেন মাসিক শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ২ সপ্তাহ আগে শরীরের ওজন ২/৪ কেজি বৃদ্ধি পায় ( সাধারনত ব্রার সাইজ ৩২ থাকলে তখন ৩৪/৩৬ হয়ে সহ শরীরের জামা কাপড় খুব টাইট হয়ে যায় ) আবার মাসিক শেষ হওয়ার পর ওজন আবার কমতে থাকে এবং সে কারনে স্থন, উরু ও নিচ পেটে চাপ দিলে ব্যাথা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞরা খুব সতর্কতার সাথে সল্প মেয়াদী প্রস্রাব বৃদ্ধি কারক ঔষধ সেবন করার পরামর্ষ দিয়ে থাকেন । ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবনে শরিরের পটাসিয়াম এবং মেগ্নেশিয়ামের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় বা কিডনির উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বিধায় খুব বেশী প্রয়োজন না হলে তা এড়িয়ে চলা ভাল এবং বিকল্প হিসাবে মুত্র বর্ধক খাবার একটি বেশী খাওয়া সহ যতা যত ডায়েটের অভ্যাস করলে তা চলে যেতে পারে যেমন, লেবুর শরবত, টমেটো, শসা, কদুর বীচি , তরমুজ ইত্যাদি )



সহযোগী মেডিসিন এবং ভেষজ চিকিৎসা ঃ ( Alternative medicine )

গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ভিটামিন সমুহের মধ্যে ভিটামিন বি-৬ মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে ভাল একটি কার্যকরী সাপ্লিমেন্ট – সে জন্য সকল স্থরের বেলায় প্রতিদিন ১০০ মিগ্রাঃ পরিমান ভিটামিন বি-৬ ট্যাবলেট সেবন করুন । ( বিদ্রঃ যাদের আয়রন এবং ক্যালসিয়ামর ঘটতি জনিত কারনে হয়ে থাকে তাদের দীর্ঘদিন এ জাতীয় ঔষধ সেবন না করলে অন্য কোন ধরনের ঔষধ সেবনে সাময়িক কাজ হলেও পরবর্তীতে তা আবার দেখা দিবেই )
বি-৬ খাদ্য উৎস ঃ আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি । এ ছাড়া অন্যান্য ভিটামিন যেমন ভিটামিন ই, বি-৩ , বি-২, ফলিক এসিড , ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি কিছুটা উপকারী ।

ভেষজ হিসাবে এফ ডি এ কৃতক অনুমোদিত ঃ
pm-13
যদিও অনেক ভেষজ আছে উপকৃত তারপর ও রিসার্চ এবং গবেষণা অনুসারে সাফ্রন ই মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে উপকারী একটা ঔষধ , যা সকলের কাছে গ্রহন যোগ্য – সে জন্য ( প্রথম ও দ্বিতীয় স্থরের অসুখে ক্যাপসুল সাফ্রন ১৫ মিগ্রাঃ (capsule placebo ) প্রতিদিন দিনে দুইবার অন্তত ২ টি মাসিক চক্র পর্যন্ত সেবন করলে নিঃসন্দেহে ভাল ফল পাওয়ার আসা করতে পারেন ।

মাসিক পূর্ব সিনড্রোমে মাসিকে শুরু হওয়ার ১৪ দিন অথবা ৭ দিন আগে যাদের হাত পা জ্বালা যন্ত্রণা, কামড়ানো ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সে জন্য ইভিনিং প্রমিজ ওয়েল ম্যাসেজ সবচেয়ে বেশী উপকারী যা অন্যান্য ম্যাসেজ মালিশে তেমন কাজ করেনা ।



কিছু অতিরিক্ত নিয়ম এবং উপদেশ ঃ ( রিসার্চ থেকে )

খাদ্যতালিকার দিকে একটু মনযোগী হবেন । বিশেষ করে মাসিক পূর্ব ১৪ দিন থেকে বিভিন্ন জ্যাঙ্ক খাবার ( বার্গার, ফ্রাইস ইত্যাদি ) থেকে বিরত থাকবেন, সুগার জাতীয় ড্রিংক পান করবেন না তবে ঠান্ডা পানি পান একটি বেশী করবেন ।
খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন বা চিনি না খাওয়া এবং যে যে খাবার প্রস্রাবের মাত্রা কমায় তা থেকে বিরিত থাকা ইত্যাদি । সেই সাথে হাল্কা ব্যায়াম (পেশী শিথিল করা এবং গভীর শ্বাস গ্রহণের ব্যায়াম করতে হবে বা যোগব্যায়াম বা ম্যাসাজ করা ভাল ) , নিয়মিত সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা এবং দিনে ঘুমানোর চিন্তা ভাবনা না করা ।
হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা বা পুস্টি জনিত অন্যান্য খনিজের অভাবে হলে নিয়মিত পুষ্টিকর ও আয়রন জাতীয় খাবার বেশী গ্রহন করা সহ একনাগাড়ে দীর্ঘদিন সে জাতীয় সাপ্লিমেন্টারী ঔষধ সেবন করার চিন্তা ভাবনা করা ।

যদি রোগী বিবাহিত হন এবং দাম্পত্য যৌন জীবনে স্বামীর যৌন স্থবিরতা চলে আসার ফলে ইস্ট্রোন হরমোনের অনাকাঙ্কিত রুপ ধারন করে সে ক্ষেত্রে উভয়য়ের খোলা মেলা আলোচনা করে চিকিৎসকের পরামর্ষে মেডিক্যাল সুত্র অনুসারে নিদ্রিস্ট কিছু ঔষধ এবং প্রক্রিয়া মেনে চললে তা অল্প দিনেই চলে যাওয়ার কথা ।

রোগী বিবাহিত না হলে সে ক্ষেত্রে গার্জিয়ানদের বিবাহ দেওার চিন্তা ভাবনা করা এবং তা না হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে নেগেটিভ মহিলা হরমোন জাতীয় ঔষধ সেবনে সাময়িক তা ধমিয়ে রাখা যায় ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন ! বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া কোন অবস্তাতেই এ জাতীয় ঔষধ সেবনের চিন্তা ভাবনা করা আর নিজের যৌন জীবন ধংস করা প্রায় সমান ) । তবে আমার ব্যাক্তিগত মতে সবচাইতে উৎকৃষ্ট পন্থা হচ্ছে নিয়মিত নিজ ধর্মীয় কর্ম কান্ড মনযোগ দেওয়া সহ সাংসারিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের দিকে একটু বেশী ধাবিত হয়ে অভ্যস্থ হতে পারলে পি এম ডি ডি থেকে রেহাই পাওয়া সম্বভ … ।

যদিও চিকিৎসার নিয়মে ট্রাকুলাইজার এবং ডিপ্রেশনাল ঔষধ সমুহ সেবনের কথা বলা হয়েছে , তারপর তা সেবন করলেও কোন অবস্থাতেই দীর্ঘদিন এক নাগাড়ে সেবন না করা ভাল নতুবা মানসিক ভারসাম্যতা তিব্র আকার ধারন করতে পারে ।
ধন্যবাদ ………………………………………।।
Version Info ঃ Created by Dr Helal Kamaly , References from – Bristol Medical University ( UK ) Harvey Simon, MD, Editor-in-Chief, Associate Professor of Medicine, Harvard Medical School; Physician, Massachusetts General Hospital. Also reviewed by David Zieve, MD, MHA, Medical Director, A.D.A.M., Inc.