shaharpar

Wednesday, 1 March 2017

থায়রয়েড হরমোন ডিজেজ ( THD ) হরমোন -পর্ব -১৮



থাইরয়েড গ্রন্থি একটি নালীবিহীন গ্রন্থি; যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। থাইরয়েড শব্দটি গ্রীক শব্দ যার অর্থ বর্ম। এটি গলার সামনে নিচের দিকে ও দু’পাশে থাকে। দেখতে প্রজাপ্রতির মত এবং বাংলায় একে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলা হয় ।থাইরয়েড গ্রন্থিটি গ্রীবাদেশে ট্রাকিয়ার দু’পাশে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ ট্রাকিয়াল-রিং [tracheal ring] -এর সামনে অবস্থিত ।প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের থাইরয়েড গ্রন্থির ওজন প্রায় 20-35 gm হয় ।

এ থেকে নিঃসৃত প্রধান হরমোনগুলো হচ্ছে টি থ্রি (T3) বা ট্রাইআইডোথাইরোনিন, টি ফোর বা থাইরক্সিন (T4) । পিটুইটারি গ্ল্যান্ড ( মস্তিষ্কে অবস্থিত হরমোন নিঃসরণকারী গ্রন্থি) থেকে নিঃসৃত রিলিজিং ফ্যাক্টর টিএসএইচ ( TSH -থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন)-এর প্রভাবে টি-থ্রি ও টি-ফোর নিঃসরণ হয় এবং থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা আয়োডিন শোষণে উদ্দীপ্ত করে ।



কীভাবে থায়রয়েড হরমোন নিঃসরণ হয় ঃ

thy-11

মুলত থাইরক্সিন মানবদেহের স্বাভাবিক গঠন ও বৃদ্ধির জন্য খুব বেশী প্রয়োজন । থাইরয়েড গ্রন্থি পরিচালিত হয়ে থাকে ব্রেনের পিটুইটারি গ্রন্থি দ্বারা। পিটুইটারি গ্রন্থি পরিচালিত হয় ব্রেনের আরেকটি গ্রন্থি দ্বারা যার নাম হাইপোথ্যালামাস। হাইপোথ্যালামাস একটি হরমোন নিঃসরণ করে যার নাম থাইরোট্রপিন রিলিজিং হরমোন (TRH)। এ হরমোনটি পিটুইটারি গ্রন্থিতে একটি সংকেত পাঠায় থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) নিঃসরণ করার জন্য এবং এর পরেই থাইরক্সিন নিঃসরণ হয় ।
মোট কথায় শরিরের প্রত্যেকটি কোষের মেটাবলিজম প্রক্রিয়ার ৮০% কাজ করে থায়রক্সিন ( T4 )এবং ২০% কাজ করে ট্রাইআইডোথাইরোনিন (T3) । সেই হিসাবে থায়রক্সিন ( Thyroxin T4 ) অত্তান্ত অপরিহার্য হরমোন ।


থাইরক্সিনের কাজ [Function of Thyroxin]:-
thy-13

থাইরক্সিন মানবদেহে নিম্নলিখিত কাজগুলো সম্পন্ন করে, যেমন : থাইরক্সিন মানবদেহের বৃদ্ধি, বিপাক নিয়ন্ত্রণ, মানসিক পরিপূর্ণতা এবং গৌণ যৌন লক্ষণ প্রকাশে সাহায্য করা । থাইরক্সিন মৌল বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে, এর প্রভাবে মৌল বিপাকীয় ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পায় । প্রতি মিলিগ্রাম থাইরক্সিন B.M.R. কে 1000 পর্যন্ত ক্যালোরিতে বাড়িয়ে দেয় । থাইরক্সিনের প্রভাবে হৃদগতি বৃদ্ধি পায় । থাইরক্সিন অন্ত্রে গ্লুকোজের শোষণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ।

থাইরক্সিনের প্রভাবে যকৃৎ থেকে গ্লুকোজেন মুক্ত হয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় । থাইরক্সিন অস্থি থেকে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসকে মুক্ত করে দেয় । থাইরক্সিনের প্রভাবে মূত্রে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । থাইরক্সিন রক্তকণিকার ক্রমপরিণতিতে সহায়তা করে । থাইরক্সিন স্তন গ্রন্থিতে দুধের ক্ষরণ বাড়ায় । থাইরক্সিন দেহে অক্সিজেন সংযোগ ক্রিয়া বাড়ায় । থাইরক্সিন ব্যাঙাচির রূপান্তরে সাহায্য করে এবং সরীসৃপ ও পক্ষীজাতীয় প্রাণীদের নির্মোচনে সাহায্য করে ।

থাইরক্সিনের প্রভাবে শিশুদের বেলায় অবর্ধনজনিত রোগ বা ক্রিটিনিজম হয়ে থাকে এবং উঠতি বয়স্কদের বা প্রাপ্তবয়স্কদের মিক্সিডিমা হয়। ক্রিটিনিজমের লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাংসপেশী ও হাড় এবং স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক বর্ধন না হওয়া। এর ফলে শিশু বেঁটে হয়, বোকা বা বুদ্ধিহীন হয়ে থাকে। জিহ্বা বড় হবে ও মুখ থেকে বেরিয়ে আসে এবং নাভির হার্নিয়া হয়। হাইপোথাইরয়েডিজম হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে অটোইমিউন ধ্বংসপ্রাপ্ত, ওষুধ, টিএসএইচ স্বল্পতা, গর্ভাবস্থায় মায়ের থাইরয়েড হরমোন স্বল্পতা ইত্যাদি।

থাইরক্সিনের প্রভাবে একজন ব্যক্তি অস্থিরতা বোধ করে এবং তার ওজন বাড়ে বা কমে যায়। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বিশেষ করে গর্ভাবস্থা বা মেনোপজের পর এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। থায়রয়েড ডিজিজের মধ্যে রয়েছে হ্যাশিমোতো’স থায়রইয়েডাইটিস ( এটি ইমিউন সিস্টেমের একটি ত্রুটিজনিত রোগ যা বংশগত কারণে হয়ে থাকে ) হাইপারথায়রয়েডিজম বা হাইপোথায়রয়েডিজম ( থায়রয়েড হরমোন বেশী বা কম ইত্যাদি

ট্রাইআইডোথাইরোনিনের কাজ (T3) ঃ ট্রাইআইডোথাইরোনিনের কাজ (T3 ) মুলত সরাসরি বিপাকীয় ক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করে সহায়তা করা ।
অতিরিক্ত ট্রাইআইডোথাইরোনিন (T3) উৎপন্ন হলে ঃ
thy-8

গ্র্যাভস ডিজেজ ( Graves’ disease- পরবর্তী পর্বে জানতে পারবেন ) , থায়রয়েড গ্ল্যান্ডের প্রদাহ অথবা টিউমার দেখা দেওয়া অথবা গলগণ্ড দেখা দেওয়া । এ ছাড়া শরীরের তাপের অসহিষ্ণুতা, , ওজন হ্রাস, ক্ষুধা বৃদ্ধি , অন্ত্রের কামড় বা সঙ্কোচনতা বৃদ্ধি , অনিয়মিত মাসিক চক্র , দ্রুত বা অনিয়মিত হার্ট স্পন্দন , বুকের ধড়ফড়তা ও কম্পন বৃদ্ধি পাওয়া , গ্লানি, বিরক্ততা বেড়ে যাওয়া ,মাথার চুল কমে যাওয়া এবং চোখের পাতার সঙ্কোচনতা বেড়ে যাওয়া যা দেখতে ‘চোখে পড়ার মত’ মনে হয় । .


ট্রাইআইডোথাইরোনিন (T3) কমে গেলে ঃ
thy-10

বড়দের বেলায় ট্রাইআইডোথাইরোনিন (T3) কমে গেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব , অবসাদগ্রস্ততা, ঘুম ঘুম ভাব; ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পারা , গলার স্বরের কোমলতা কমে যাওয়া এবং অনেকটা ভারি বা কর্কশ শোনা, হৃদস্পন্দন কমে যাওয়া ,উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথা অনুভব করা অথবা হার্ট ফেইলর হতে পারে, হৃদযন্ত্রের আবরণে অথবা ফুসফুসের আবরণে পানি জমা ওজন বৃদ্ধি, ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া, সৃতি শক্তি কমে যাওয়া, স্নায়ু ও মাংসপেশীর সমস্যা যেমন, মাংসপেশীতে ব্যথা বা শক্ত চাপ অনুভব করা; স্নায়ু ও মাংসপেশীনির্ভর রিফ্লেক্স কমে যাওয়া; বধিরও অনুভূত হওয়া , মাংসপেশীর টান কমে যাওয়া ইত্যাদি । চর্ম বা ত্বকের মধ্যে যে সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন, শুষ্ক, খসখসে ও ব্যাঙের ত্বকের মতো হয়ে যাওয়া, ভিটিলিগো নামক এক ধরনের শ্বেতী রোগে আক্রান্ত হওয়া; চর্মে মিক্সিডিমা নামক এক ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি । প্রজননতন্ত্রে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন, মাসিকের সময় বেশি রক্তপাত হওয়া; বাচ্চা হওয়ার ক্ষমতা নষ্ট হওয়া; প্রজননে অক্ষমতা ইত্যাদি । পরিপাকতন্ত্রের সমস্যার মধ্যে পায়খানা শক্ত হওয়া;পেটে পানি জমা হওয়া সহ নানান ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে । প্রাপ্ত ব্যস্ক অনেকের বেলায় গলগণ্ড প্রকাশ পেতেও পারে আবার নাও পেতে পারে …………………………।

রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় , বাংলাদেশ তথা তৃতীয় বিশ্বের ৪৭% বেলায় অসুখটি আয়োডিনের অভাবেই হয়ে থাকে । আয়োডিন মানব দেহের শারীরিক এবং মানসিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য একটি খনিজ পদার্থ । বিশেষ করে যে সকল মায়েদের সন্তান দান করার সময় যদি শরীরে পর্যাপ্ত পরিমান আয়োডিন না থাকে তাহলে সেই সকল মায়েদের মধ্যে ৬১% মা বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম দিয়ে থাকেন ।
অনেকেই মনে করেন একমাত্র গলগণ্ড দেখা দিলেই থায়রয়েড হরমোনের অভাব মনে করতে হবে । না তা সম্পূর্ণ ভুল বরং পরিবেশগত কারনে ৮০% বেলায় তা দেখা যায়না বিধায় প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণ চিকিৎসকরা থায়রয়েড হরমোনের প্রবাভ জনিত অসুখ গুরুত্বর অবস্থায় না যাওয়া পর্যন্ত অথবা সঠিক পরিক্ষা নিরীক্ষা না করা পর্যন্ত অনেক সময় তা নিশ্চিত হওয়া সম্বভ হয়না, ইহাই সত্য !!!

রিসার্চ ঃ নতুন ভাবে গবেষণা অনুসারে ইহা ও প্রমাণিত যে থায়রয়েড হরমোন ক্যাটাবলিজম এবং ম্যাটাবলিজম উভয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্লাইকোপ্রটেন উৎপাদন করে যাকে সেক্স হরমোন বাইন্ডিং গ্লোবিউলিন বা SHBG বলা হয় । সে কারনেই পুরুষ এবং মহিলাদের সেকেন্ডারি বয়সে যৌন ক্রীড়াকে মারাত্তক ভাবে প্রভাবিত করে থাকে এবং মহিলাদের মেনপোজের বড় একটা কারণ ও হতে পারে ।


মেডিক্যাল জার্নাল অনুসারে থাইরয়েড গ্রন্থির রোগগুলোকে মোটামুটি পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়:
thy-9

১- হাইপারথাইরয়েডিজম ( Overactive thyroid ) থাইরয়েড গ্লান্ডের বেশী কার্যকরীতা
২- হাইপোথায়রয়েডিজম ( Underactive thyroid ) থাইরয়েড গ্লান্ডের কম কার্যকারিতা
৩- গলগণ্ড রোগ বা ঘ্যাগ
৪- থাইরয়েড গ্লান্ডের প্রদাহ বা থাইরয়েডাইটিস– বিশেষ করে পোস্টপার্টাম থায়রয়েডাইটিস (Thyroiditis, especially postpartum thyroiditis)।
হাইপারথাইরয়ডিজম ও হাইপোথাইরয়ডিজম ভিন্ন ধরনের অসুখ হলেও কিছু লক্ষণ আছে, যা উভয় রোগের ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
৫- – থাইরয়েড গ্লান্ডের ক্যান্সার বিশেষ করে থায়রয়েড নডিউলস (Thyroid nodules)।




কিভাবে বুঝবেন সমস্যাটা থাইরয়েড হরমোনের? ( বাংলা স্বাস্থ্য ম্যাগাজিন থেকে সংগৃহীত — হেলথ টিপস )

thy-4
 
অবসন্নতা
অনেক কারনেই আপনি দূর্বল বোধ করতে পারেন। কিন্তু নিয়মিত দূর্বল লাগার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়েডিসম। হাইপো থাইরয়েডিসম হলো শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম থাইরয়েড হরমোন তৈরি হওয়া। সারা রাত পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরেও যদি সকালে অবসন্ন লাগে অথবা সারা দিন ধরে ঝিমুনি আসে তাহলে থাইরয়েড হরমোন ঠিক মতো কাজ করতে কিনা পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত।
বিষন্নতা
খুব বেশি বিষন্নতায় ভোগাও হাইপোথাইরয়েডিসম এর একটি লক্ষণ হতে পারে। থাইরয়েড হরমোন মস্তিষ্কে ভালো লাগার অনুভুতি সৃষ্টির পেছনে ভূমিকা রাখে। তাই শরীরে যখন প্রয়োজনের তুলনায় কম থাইরয়েড হরমোন উৎপন্ন হয় তখন শরীরের পাশাপাশি মনের উপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা
সারাক্ষণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা হাইপারথাইরয়েডিসম এর লক্ষণ হতে পারে। হাইপারথাইরয়েডিসম হলো শরীরে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাইরয়েড হরমোন তৈরী হওয়া। সারাক্ষণ অস্থির হয়ে থাকা এবং একেবারেই বিশ্রামহীন থাকলে হাইপারথাইরয়েডিসমের সমস্যা আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করানো দরকার।
খাবারে রুচির পরিবর্তনঃ
খাবারের রুচি অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সেটা হাইপারথাইরয়েডিসমের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে খাবারের স্বাদ ও গন্ধ কম লাগে অনেক সময়। এক্ষেত্রে খাবারে রুচির অভাব দেখা দেয়।
মস্তিষ্কের উপর প্রভাব
মস্তিষ্কের উপর থাইরয়েড হরমোনের প্রভাব আছে। কোনো কিছুতে যদি মনোযোগ আনতে সমস্যা হয় বা মন এদিক ওদিক বেশি চলে যায় তাহলে হাইপারথাইরয়েডিসম থাকতে পারে। আবার একই ভাবে কারো যদি সম কিছু ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে তাহলে তার হাইপোথাইরয়েডিসম থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে।
ত্বকের উপর প্রভাব
হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক ও চুলকানীভাব যুক্ত হতে পারে। হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ঘাম কম হয় এবং ত্বক তার প্রয়োজনীয় আদ্রর্তা না পেয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। হাইপোথাইরয়েডিসমের রোগীদের মধ্যে নখ ভাঙ্গার বা ফাটল ধরার প্রবণতাও বেশি।
গলার স্ফীতি
থাইরয়েড হরমোনের অভাবে অর্থাৎ হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে গলা ফুলে উঠতে পারে। গলায় হাত দিয়ে কোনো অস্বাভাবিক ফোলা কিছু পেলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। এছাড়াও থাইরয়েড হরমোনের অভাবে গলার আওয়াজ কিছুটা কর্কশ হয়ে যেতে পারে হঠাত করে।

ওজন পরিবর্তন
হঠাৎ করেই কোনো কারণ ছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়াটা হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে হতে পারে। কেউ যদি খাওয়া না বাড়ানো সত্ত্বেও হঠাৎ করে যদি ওজন সমস্যায় ভোগে তাহলে তার ডাক্তারের কাছে থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করানো উচিত। একই ভাবে যাদের হঠাৎ করেই বেশ খানিকটা ওজন কমে যায় তাদের হাইপারথাইরয়েডিসম থাকার সম্ভাবনা আছে।
চুলের সমস্যা
হাইপোথাইরয়েডিসম হলে অতিরিক্ত চুল পড়া,চুলের আগা ফেটে যাওয়া ও চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। থাইরয়েড হরমোনের স্বল্পতা অথবা আধিক্য দুটাই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে সময়মত সনাক্ত করতে পারলে নির্দিষ্ট মাত্রার অসুধ খেয়ে পুরোপুরি সুস্থ থাকা সম্ভব। তাই থাইরয়েড হরমোন সমস্যার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দেরী না করে দ্রুত ডাক্তারের সরনাপন্ন হওয়া উচিত।

পরবর্তী পর্বে হাইপারথাইরয়েডিজম Overactive thyroid কি বিস্তারিত তুলে ধরার চেস্টা করব ……………………………………। ধন্যবাদ


Created by Dr H kamaly ( MPH ) PhD ( Public health &  Med Science )
Supporting Research :
Medical tips collection – Dr MA Jolil Ansari ( BSMU – Dhaka )
Atis G. Hyperthyroidism: a risk factor for female sexual dysfunction. J Sex Med. 2011;8(8):2327-33.
Bagnasco M, Bossert I, Pesce G. Stress and autoimmune thyroid diseases. Neuroimmunomodulation. 2006;13(5-6):309-17.
Bahn R, Levy E, Wartofsky L. Graves’ disease. J Clin Endocrinol Metab. 2007;92(11):2 p following 14A.
Bope ET, Kellerman RD, eds. Conn’s Current Therapy 2014. 1st ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2013.
Dominguez LJ, Bevilacqua M, Dibella G, et al. Diagnosing and managing thyroid disease in the nursing home. J Am Med Dir Assoc. 2008;9(1):9-17.
Feldman M, Friedman LS, Brandt LJ, eds. Sleisenger & Fordtran’s Gastrointestinal and Liver Disease. 10th ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2015.
Ferri FF. Ferri’s Clinical Advisor 2014. 1st ed. Philadelphia, PA: Elsevier Mosby; 2013.
Fumarola A. Therapy of hyperthyroidism in pregnancy and breastfeeding. Obstet Gynecol Surv. 2011;66(6):378-85.
Ho CH, Chang TC, Guo YJ, Chen SC, Yu HJ, Huang KH. Lower urinary tract symptoms and urinary flow rates in female patients with hyperthyroidism. Urology. 2011;77(1):50-4.
Klein I, Danzi S. Thyroid disease and the heart. Circulation. 2007;116(15):1725-35.
Nayak B, Hodak SP. Hyperthyroidism. Endocrinol Metab Clin North Am. 2007;36(3):617-56, v. Review.
 
Advertisements
Occasionally, some of your visitors may see an advertisement here
You can hide these ads completely by upgrading to one of our paid plans.

Leave a Reply

Monday, 13 February 2017

ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) স্ত্রীরোগ ( ৪র্থ পর্ব ) Dr.H.Kamaly







ডিসমেনোরিয়া ( Dysmenorrhea) হল নারীর মাসিক ঋতুস্রাবের সময় হওয়া যন্ত্রনা ( গ্রীক শব্দ "ডিস" মানে হ'ল কষ্টকর, "মেন'" মানে হ'ল মাসিক ও "রিয়া" মানে হ'ল প্রবাহ ) -অর্থাৎ মাসিক শুরু হবার আগে বা মাসিক চলাকালীন সময়ে নারী যে তীব্র ব্যাথা অনুভব করে থাকেন তাকে ডিসমেনেসিয়া বলে এবং ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার সাথে সাথে যন্ত্রনাও কমে যায় । সাধারনত যৌবন সুচনার ( বয়ঃসন্ধির ) পর থেকে ২০-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সাধারণত প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার সমস্যা থাকে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা এবং তীব্রতা কমে আসতে থাকে । ইহাই প্রকৃতির নিয়ম ।


কেন এই ব্যাথা হয় ? ( ফিজিওলজি অনুসারে ) ঃ
dys-03
জরায়ুর U ভিতরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন এফ-২ আলফা রস্টাল্ড নামক রাসায়নিক পদার্থ গুলির ক্রিয়ার ফলে জরায়ুর ভিতরের লাইনিং ছোট হয়ে যায় এবং প্রস্তুত হয় গর্ভধারণের জন্য , কিন্তু তা গর্ভসঞ্ছারিত না হলে যতক্ষণ পর্যন্ত লাইনার গুলো প্রসারিত না হয় ততক্ষন জরায়ুর মাংসপেশীর সংকোচিত থাকে এবং জরায়ুতে রক্ত সঞ্চালন কমে যায় । মুলত সে কারনেই মাসিকের রক্তস্রাবের সাথে যন্ত্রনা হয়ে থাকে ।

যন্ত্রনা বেশী হয় কেন ? যাদের ক্ষেত্রে এই সব রাসায়নিক পদার্থ হয় বেশি পরিমাণে নির্গত হয় অথবা মহিলার প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের প্রতি বেশি সংবেদনশীল (sensitive )হয়ে তা হয়ে থাকে অথবা মস্তিষ্কের পিটুইটরি গ্রন্থি থেকে ভেসোপ্রসিন নামক হরমোন প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বেশী কাজ করে বিধায় যন্ত্রণা বেশী হয়ে থাকে ।
অন্য থিওরি মতে , জরায়ুর রক্তপ্রবাহ হ্রাস পেলে কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের উৎপত্তি হয় , যার ফলে টাইপ-সি যন্ত্রনার কোষসমূহ সক্রিয় হয়ে উঠে এবং সে কারনে ঠিক মত অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারেনা , এছাড়াও লিউকোট্রিন লিউট নামক অন্য একধরণের রাসায়নিক তত্ত্বের উৎপত্তির জন্যও ডিসমেনোরিয়া হয় বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন ৷



ডিসমেনোরিয়া বা মাসিককালীন ব্যথা দু'প্রকার। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি।
dys-04

প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া হল- এতে জরায়ুর অসুখ থাকেনা । মাসিক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা শুরু হয়ে ( ২-৩ দিন ব্যথা থাকে ) মসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় এবং ৯০% বেলায় বয়স ২০ এর উপরে চলে গেলে দৈহিক হরমোন চক্র সুন্দর একটা রুটিনে চলে আসে বিধায় তা খুব কম দেখা যায় । তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথাই বেশি দেখা যায় ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হল - এতে জরায়ু , ডিম্বাশয় বা প্রজনন তন্ত্রের যে কোন একটা অসুখের লক্ষন এবং সেই অসুখ দূর হওয়া না পর্যন্ত সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বা দীর্ঘ স্থায়ী মাসিক ব্যাথা থাকবেই । তৃতীয় বিশ্বে ৭০% মহিলাদের সন্তান প্রসবের পর মেয়েদের প্রজননতন্ত্রে ইনফেকশনের কারণকে বেশি দায়ি করা হয় । ১৯% মহিলাদের বেলায় জরায়ুর ফাইব্রয়েড, অ্যান্ডোমেট্রিওসিস , অ্যাডেনোমায়োসিস , যৌন জীবাণুর ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া লেগে থাকতে দেখা যায় - তবে অসুখের কারনে হলে মাসিক জনিত ব্যাথা ৭/৯ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে ।


কারণ ঃ
dys-06
মানশিক ( যারা মানসিক দিক থেকে খুবি স্পর্শ কাতর বা ভাব প্রবণতা বেশি তারা এমনিতেই যন্ত্রণা একটু বেশী অনুভব করা স্বাভাবিক )

পরিবেশগত অজ্ঞতা অথবা বংশগত ( মায়ের হলে মেয়ের , বিশেষ করে মা বাবার আদরের মেয়েদের বেলায় একটু বেশী অথবা পারিবারিক ভাবে বেশী অবহেলিত মেয়েরা গড়ে বেশী আক্রান্ত হয়ে থাকে )
- মহিলা হরমোনের ভারসাম্য হীনতা ( ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন ) অথবা প্রজেস্টেরন হরমোন নিঃসরণ বেড়ে যাওয়া - যে কোন কারনে জরায়ুর মধ্যে স্রাবের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে অথবা গর্ভপাত করালে - রক্তস্বল্পতা অথবা স্থুলতা ইত্যাদি কারনে প্রাইমারী মাসিক জনিত ব্যাথা প্রতিটা চক্রেই কম বেশী দেখা দিতে পারে ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়ার প্রধান কারন ঃ ( সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া সাধারণতে ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মহিলাদের হতে দেখা যায় )
dys-07
যৌন জীবাণুর ইনফেকশন , এন্ডোমেট্রিওসিস Endometriosis : ( এক্ষেত্রে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুসহ ফেলোপিয়ান টিউব, ডিম্বাশয় এবং পেল্ভিসে চলে আসে এবং ব্যথার সৃষ্টি করে ) - ইউটেরিন ফাইব্রোয়েডস - Uterine fibroids : ( এই অবস্থায় জরায়ুর গাত্রে টিস্যু একত্রিত হয়ে পিন্ড সৃষ্টি করে। যার ফলে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে এই পিন্ড থেকে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় না ) এডেনোমায়োসিস Adenomyosis :( এই অবস্থায় জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণী টিস্যু জরায়ুর পেশিবহুল দেয়ালে বৃদ্ধি পেতে থাকে ) - পেলভিক ইনফ্লামেটরী ডিজিজ Pelvic inflammatory disease (পি-আই-ডি) ( এটি মহিলাদের জননাঙ্গের একটি ইনফেকশন যা সাধারনত অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে ) সারভিকাল স্টেনোসিস Cervical stenosis : ( জরায়ুর মুখ ছোট হলে তা মাসিকের রক্তপ্রবাহে বাধা দেয় এবং জরায়ুতে চাপের সৃষ্টি করে ও ব্যথা হয় ) - ওভারিয়ান সিস্ট (ওভারিয়ান সিস্ট হলো ওভারিতে থাকা পানি বা তরলভর্তি থলি ) - পেলভিক টিউবারকুলোসিস ( টিবি ) ভলভোডাইনিয়া, অস্বাভাবিক গর্ভাবস্থা অথবা গর্ভপাত ইত্যাদি কারন সমুহ বেশী দায়ী । সাথে আনুসঙ্গিক অন্যান্য লক্ষণ বিদ্যমান থাকবে । যেমন , - মাসিক অনিয়মিত হওয়া, মাসিক স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া , মাসিকের মধ্যে কয়েকবার রক্তস্রাব হওয়া, যোনিদ্বার দিয়ে স্রাব নির্গত হওয়া, যৌন ক্রিয়াতে কষ্ট অনুভব করা ইত্যাদি ।



লক্ষণ :
dys-010
মাসিক স্রাবের প্রথম দিনে তীব্র ব্যথা হয়। এটি খিঁচুনী ব্যথার মতো থেমে থেমে আসে অথবা অবিরাম থাকে। ব্যথা ২/৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। । ব্যাথার তীব্রতা কখনও খুব বেশী হতে পারে । যেমন, তলপেটে ও দুই উরুর সামনের দিকে ও ভেতরের দিকে প্রচন্ড ব্যথা হয়ে থাকে, কখনও কোমরেও ব্যথ অনুভুত হয়। ব্যথার সাথে বমি ভাব বা বমি হতে পারে মাথা ব্যথা সহ শারীরিক অস্বস্থি বোধ হতে পারে । কখনও কখনও পাতলা পায়খানা, পায়খানার রাস্তায় চাপানুভুতি হওয়া । টেনশনে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে। কখনও স্তনেও ব্যথা হতে পারে। রোগী বেশী দূর্বল হয়ে গেলে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। কামড়ানো ধরার মত ব্যাথা হলে ঋতুস্রাবে রক্তের পরিমাণ খুবই অল্প হতে পারে অথবা কার ও বেলায় দীর্ঘায়িত মাসিক হতে পারে । সেই সাথে অনিদ্রা, অস্বস্তি, যোনীপথে চুলকানি , যোনী দিয়ে রক্তের সাথে স্রাবের পরিমান বেশী নির্গত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন থাকতে পারে ।

সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হলে জরায়ু বা জনন তন্ত্রের যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের লক্ষন সহ উপরের লক্ষন সমুহ বিদ্যমান থাকতে দেখা যায় ।






রোগনির্ণয় ঃ
dys-011
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ায় শারীরিক পরীক্ষায় বা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে কোনো সমস্যা পাওয়া যায় না। রোগের উপসর্গের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে সাধারণত তার ওপর নির্ভর করেই প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া ডায়াগনোসিস করা হয় বা ৯৯% ক্ষেত্রে কোন পরিক্ষার প্রয়োজন হয়না -

যেমন : প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়াতে ব্যথা মাসিক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে শুরু হয়ে ১২-৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকে না - ফাইব্রয়েডের জন্য ব্যথা হলে সেটা মাসিকের প্রথম ২-৩ দিন থাকে, এরপর আর থাকে না তবে প্রত্যেক মাসিকের সময় ব্যথার তীব্রতা বাড়তে থাকে। এন্ড্রোমেট্রিয়সিস ও এডিনোমায়োসিসের ক্ষেত্রে মাসিকের ২-৩ দিন আগে ব্যথা শুরু হয়ে মাসিকের সময় ব্যথা তীব্র হয় এবং মাসিকের পরও এই ব্যথা কিছু কিছু থেকেই যায়। জরায়ুর ইনফেকশনের (পিআইডি) ব্যথা মাসিকের ২-৩ দিন আগে শুরু হয় এবং মাসিক শুরু হলে ব্যথা চলে যায়। এক্ষেত্রে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং সহবাসের সময় ব্যথা হতে পারে।

সে জন্য সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া বলে সন্দেহ হলে অবশ্যই বেশ কয়েকটি পরীক্ষার আবশ্যকতা হতে পারে ৷ সেইগুলি হ'ল রক্তের টি সি, ডি সি , ই এস আর,হিমোগ্লবিন, ভি ডি আর এল; ভেজাইনাল স্রাব পরীক্ষা; প্রসাব পরীক্ষা; হিষ্ট-সালফিংগোগ্রাম এক্সরে; পেটের আলট্রাসাউন্ড; এন্ডোমেট্রিয় বায়প্সি; লেপ্রোস্কপিক পরীক্ষা ইত্যাদি রোগের ধরনের উপর চিকিৎসকরা পরীক্ষার জন্য বলতে পারেন ।




চিকিৎসা ঃ
dys-012
প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন ঔষধের প্রয়োজন নাই , তবে যদি ব্যাথা বেশী হয় তাহলে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বিরোধী NonAnt InflammatoD NI বেশিরভাগ রোগীর ব্যাথা দূর করে ৷

 নেপ্রস্কেন, আইব্রুপ্রফেন,কিটোপ্রফেন,মেফেনেমিক এসিড,ডাইক্লফেনেক ইত্যাদি এই শ্রেণীতে পড়ে। এমন ওষুধসমূহ প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের উৎপাদনে বাধা দেয়ার ফলে রোগীর ব্যাথা নিয়ত্রনে আসে ৷ সাধারণত এইরকম যে কোনো একধরণের ঔষধ তিন মাসিক চক্রের জন্য খেতে বলা হয় ৷ যন্ত্রনা অনুভব হওয়ার সাথে সাথে ওষুধগুলি আরম্ভ করে মাসিক চলতে থাকা দিনকয়টিতে খেতে হয় ৷ ( মনে রাখবেন এই সব ঔষধ খালি পেটে সেবন অথবা বেশী সেবনে এসিডিটি,গেষ্ট্রাইটিস, হেমাটোমেসিস ইত্যাদি হতে পারে- তবে রিফক্সিক্যাব জাতিয় গ্রোফের ড্রাগস পাকস্থলীর প্রদাহ জাতীয় সমস্যা কম তৈরি করে Cyclooxygenase-2 ( rofecoxib, Vioxx - Tablets: 12.5 mg, 25 mg, and 50mg. Oral Suspension: 12.5 mg/5 mland 25mg/5ml )
(http://www.medicinenet.com/rofecoxib/page3.htm )


৩ মাসিক চক্রের পর ও যদি মাসিক চক্রের ব্যাথা না কমে এবং মহিলা হরমোন ভারসাম্য জনিত কারনে মনে হয় তাহলে চিকিৎসকরা মহিলা হরমোন অথবা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ ( জন্ম নিয়ত্রন বড়ি,যেমন মন্টলুকাস ইত্যাদি ) ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র নিয়মিত সেবনে মাসিক চক্রের ব্যাথা আর থাকার কথা নয় । ( ইষ্ট্রজেন ও প্রজেষ্টরন হরমোন মিলিত থাকার ফলে এটি সেবনে ডিম্বকোষ থেকে ডিম্ব প্রস্ফুটিত হয় না বিধায় যন্ত্রনা অনুভব করে না ৷ অর্থাৎ ওভুলেশন (Ovulation) রোধ করলে মাসিকের যন্ত্রনা হয় না । যদি মাসিক স্রাবের সময় রক্ত বেশি যায় তাহলে ওষুধের পাশাপাশি আমিষ সমৃদ্ধ সুষম খাবার বেশি খেতে হবে এবং একি সাথে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন ।

রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মাল্টিভিটামিন ভিটামিন সমূহের মধ্যে একমাত্র ভিটামিন ই ছাড়া মাসিক চক্রের ব্যাথা কমার তেমন কোন প্রমান অন্যান্য ভিটামিন সমুহের নাই ( ভিটামিন ই জরায়ুর সঙ্কোচন সৃষ্টিকারী প্রোস্টাগ্লান্ডিন তৈরি কমিয়ে দিয়ে প্রসারণকারী প্রোস্টাসাইক্লিন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যথা কমে যায় , ৫০০ আই ইউ ভিটামিন ই মাসিকের ২ দিন আগ থেকে মোট ৫ দিন প্রতি মাসিক চক্রের সময় সেবনের পরামর্শ দেওা হয় ) । সে কারনে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার অথবা ক্যাপসুল সেবন করতে পারেন ।



গবেষণা ঃ  
যারা কোন ঔষধ সেবন করতে আগ্রহী নয় সে ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড আকুপাংচার বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ৩ মাসিক চক্রের সময় তিন বার আকুপাংচার করাতে পারলে ২ বছর পর্যন্ত মাসিক জনিত ব্যাথা ( ডিসমেনোরিয়া ) প্রতিরোধ করা সম্বভ ( রিসার্চ )


কিভাবে নিজে নিজে আকুপ্রেসারের মাধ্যমে মাসিক জনিত ব্যাথা সাময়িক নিয়ত্রন করবেন ঃ ( ছবি দেখে মিলিয়ে নিন )
dys-2dys-8
dys-3dys-9dys-013
পায়ের ঘন্টা থেকে ২ ইঞ্চি উপরের মধ্যবর্তী স্থান সমুহে এল্টি আঙুলের মাথা দিয়ে ( ভাল হবে ছোট স্ট্রিকার জাতীয় কিছু রেখে চাপ দেওয়া ) চাপ দিয়ে ধরুন এবং যেখানে আঙ্গুলের মাতার চাপের কারনে একটু বেশি ব্যাথা যুক্ত মনে করবেন সেখানে এক মিনিট করে ৩ বার তিন মিনিট চাপ দিয়ে ধরে রাখুন -একি ভাবে ছবিতে নিচ পেটে যে ৬ টি পয়েন্ট দেখানো হয়েছে সেখানে ও আঙুলের মাতা দিয়ে চাপ প্রয়োগ করুন এক মিনিট করে দেখবেন মাসিক জনিত ব্যাথা প্রায় কমে গেছে এবং এভাবে যে কয়দিন ব্যাথা থাকবে ( ৫ দিন ) প্রতিদিন একবার করে করতে থাকুন । গবেশনা অনুসারে ৬৭% বেলায় পরবর্তীতে মাসিক জনিত ব্যাথা আর থাকার কথা নয় ।




একজন আকুপাংচার বিশেষজ্ঞ চাইলে উক্ত এস পি৬ ( SP6 ) পয়েন্টে ভিটামিন কে-১ ইনজেকশন প্রয়োগ করে ২ মিনিটের ভিতর ব্যাথা কমিয়ে দিতে পারেন বা মাসিক জনিত প্রবল ব্যাথায় মাত্র দুই মিনিটের ভিতর বেশ ভাল রেজাল্ট পাওয়া যায় এবং একি ভাবে মাসিক জনিত ব্যাথায় কার্যকর আকুপাংচার পয়েন্ট সমুহে যথা যত ভাবে প্রয়োগ করলে মাত্র ৩ দিনের চিকিৎসায় পুরন মাসিক জনিত ব্যাথা চিরস্থায়ী নির্মূল করা সম্বভ । মাসিক ব্যাথার জন্য কার্যকর পয়েন্ট গুলো হছছে ঃ SP6 + CV4 (Guanyuan) + SP10 (Xuehai) + K3 (Taixi) + SP8 (Diji) ---- রিসার্চ ফর্ম ন্যাশনাল কম্বাইন্ড থ্যারাপি ইউকে এবং UCSF ( ডঃ হেলাল )
আর ও বিস্তারিত জানতে চাইলে ক্লিক করুন ( http://www.osher.ucsf.edu/wp-content/uploads/2014/11/VitaminKAcupoint_Dysmenorrhea.pdf )




বিয়ে হলেই কি ডিসমেনোরিয়া কমে যায় ?

মুলত বিয়ে হলে ব্যাথা কমে যায় তা সম্পূর্ণ সঠিক নয় তবে বিয়ে করার পর গর্ভধারণ করলে ডিসমেনোরিয়া ৯০% বেলায় সেরে যায় তা সত্য । কারন হিসাবে দেখা যায় জরায়ুতে সন্তান ধারন করার ফলে নর্মাল সন্তান প্রসবের ফলে পরবর্তীতে মাসিক স্রাবের সময় প্রোস্টাগ্ল্যাণ্ডিন নিঃসরণ কমে যায় বলে মনে করা হয়, যা ডিসমেনোরিয়া সারানোতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া স্বাভাবিক প্রসবের ফলে জরায়ু মুখ প্রশস্ত হয়। এতে মাসিক স্রাব দ্রুত ও সহজে বেরিয়ে যেতে পারে এবং ব্যথা অনুভূতি বহনকারী স্নায়ুর সংবেদনশীলতা কমে যায় বিধায় ডিসমেনোরিয়া নিরাময়ে সহায়ক বলে অনেকটা প্রমানিত ।

বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , বিধিনিষেধ হিসাবে কম চর্বিযুক্ত সুষম নিরামিষ আহার বেশি খাওয়ার চেটা করা এবং প্রোটেন যুক্ত খাবার বেশি গ্রহন সহ চিনি জাতীয় খাবার কম আহার করুন । মাসিক চলা কালীন সম্যে হট বাথ , নিচ পেটের হাল্কা ম্যাসেজ , গরম স্যাঁক ইত্যাদি করলে সাময়িক কিছুটা আরাম বোধ হতে পারে । ওজন বেশি মনে করলে তা ব্যায়াম ও ডায়েটের মাধমে কমাতে হবে।

সেকেন্ডারি ক্ষেত্রে কি কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হচ্ছে, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হবে এবং সে কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে । তবে অবশ্যই তার সাথে যে অসুখ থাকবে সেই অসুখের পুরন লক্ষন বিদ্দমান থাকবেই ।
ধন্যবাদ --------------------------------------

Created by Dr Helal Kamaly --

Supporting Research

Balbi C, Musone R, Menditto A, et al., Influence of menstrual factors and dietary habits on menstrual pain in adolescence age. Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2000;91(2):143-8.
Barnard ND, Scialli AR, Hurlock D, Bertron P. Diet and sex-hormone binding globulin, dysmenorrhea, and premenstrual symptoms. Obstet Gynecol. 2000;95(2):245-50.
Bernstein MT, Graff LA, Avery L, Palatnick C, Parnerowski K, Targownik LE. Gastrointestinal symptoms before and during menses in healthy women. BMC Womens Health. 2014;14:14.
Bope & Kellerman: Conn's Current Therapy 2013. 1st ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2012.
Chen YW, Wang HH. The effectiveness of acupressure on relieving pain: a systematic review. Pain Manag Nurs. 2014;15(2):539-50.
Dennehy CE. The use of herbs and dietary supplements in gynecology: an evidence-based review. J Midwifery Womens Health. 2006;51(6):402-9.
Ferri: Ferri's Clinical Advisor 2016. Philadelphia, PA: Elsevier; 2016.
Fjerbaek A, Knudsen UB. Endometriosis, dysmenorrhea and diet -- what is the evidence? Eur J Obstet Gynecol Reprod Biol. 2007;132(2):140-7.
Ghodsi Z, Asltoghiri M. The effect of fennel on pain quality, symptoms, and menstrual duration in primary dysmenorrhea. J Pediatr Adolesc Gynecol. 2014;27(5):283-6.
Grimes DA, Hubacher D, Lopez LM, Schulz KF. Non-steroidal anti-inflammatory drugs for heavy bleeding or pain associated with intrauterine-device use. Cochrane Database Syst Rev. 2006;(4):CD006034.
Guerrera MP, Volpe SL, Mao JJ. Therapeutic uses of magnesium. Am Fam Physician. 2009 Jul 15;80(2):157-62. Review.

Tuesday, 7 February 2017

মাসিক পূর্ব সিনড্রম (PMS ) স্ত্রীরোগ ( ৩য় পর্ব ) Dr.H.Kamaly

মাসিক পূর্ব সিনড্রম (PMS ) স্ত্রীরোগ

 ( ৩য় পর্ব - Dr.H.Kamaly )


 
 
 
 
 
 
3 Votes

মাসিক শুরু হওয়ার ১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে যে শারীরিক, মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় , তাকেই মাসিক পূর্ব সিনড্রম বা PMS বলে । একি সাথে যদি মস্তিস্কের হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল অথবা সঠিক ভাবে কাজ না করে বরং মস্তিক্স থেকে সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বেশি হয় এবং সে কারনে মাসিক চক্রের প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় যে শারীরিক ও মানসিক অশান্তি বা পরিবর্তন দেখা দেয়, ইহাকে মাসিক পূর্ব ডিস্পরিক ডিসঅর্ডার বা পিএমডিডি ( PMDD) বলা হয় ( Premenstrual Dysphoric Dysorde ) ।


রিসার্চ অনুসারে দেখা যায় মহিলাদের মাসিক পূর্ব সিনড্রম এমন একটা অসুখ যার মুল কারন চিকিৎসকরা অনেক সময় বুঝে উঠা সম্বভ হয়না বিধায় লক্ষন অনুসারে ঔষধ সেবন করে অনেক রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্বভ হয়না ।

pm-7


কারন ঃ
গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ৮৫ % বেলায় নিম্নের কারন ই বেশী দায়ী — এবং ফিজিওলজির সুত্র অনুসারে প্রধান কারনের মধ্যে ৩ টি কারন ই সবচেয়ে বেশী উল্লেখ যোগ্য ।

১- নারী হরমোনের ভারসাম্যতা জনিত কারন ঃ প্রলিফেরাটিভ ফেজের (মাসিক শেষ হওয়ার পর ১০/১২ দিন ধরা হয় ) সময় ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টারন দুটি হরমোনের মধ্যে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় প্রজেস্টারন হরমোনের মাত্রা একক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দেয় ( বিবাহিত ও মেনোপোজের কাছা কাছি বয়সের বেলায় বেলায় ৯৬% )

বিপরিত দিকে উক্ত মহিলা যদি অবিবাহিত ও বয়স ২০-৩০ এর ভিতরে থাকে তাহলে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে –প্রজেস্টারন হরমোনের পরিমান শূন্যের কোটায় নিয়ে আসে অথবা তা নিষ্ক্রিয় থাকে বিধায় বিধায় মাসিক পূর্ব সিনড্রম দেখা দিয়ে থাকে এবং সে সময় কারও কারও বেলায় সেক্রেটরি ফেইজ কে দিরঘায়িত করে , যেমন মাসিক চক্র ২১ দিনের পরিবর্তে তা ৫/৬ দিন দেরিতে হয়ে থাকে । ( মেডিক্যাল সাইন অনুসারে একে স্বাভাবিক মাসিক চক্র বলা যায় যদি রোগীর বয়স ৩৫ এর কাছাকাছি থাকে )

গবেষণায় আর ও দেখানো হয়েছে এ ধরনের রোগিদের গর্ভ ধারন ( ডিম্ব নিশিক্তকরন ) করতে ও অনেক সময়ের প্রয়োজন ( পুরাতন রোগিদের বেলায় কম পক্ষে ৬ হতে ১১ টি মাসিক চক্রের অপেক্ষা করতে হয় ) তবে অবিবাহিতদের বেলায় সন্তান জন্ম দেওার পর তা আর থাকেনা যদি স্থায়ী ভাবে স্নায়ুবিক কোন অসুখের জন্ম বা হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা না থাকে । মুলত সে কারনেই মেজাজের পরিবর্তন , উদ্বেগ, এবং অস্বস্তিবোধ সহ ওভারিয়ান স্টেরয়েড জাতিয় সমস্যা লেগে থাকে – ডকুমেন্টারি তথ্য অনুসারে , ৯১% বেলায় পূর্বে যে কোন একসময় অনিয়মিত মাসিক চক্রের ইতিহাস দু একটা থাকবেই । ( R theory-Dr Helal) ।

২- হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারনে (HPA) ঃ হাইপো – থ্যালামিক পিটিইটারি অ্যাড্রিনাল সিস্টেমের প্রধান কাজ হল , মস্তিস্কের সেরেবেলাম হতে নিউরোট্রান্সমিটার জনিত কারনে প্রজনন,মিজাজ বা আচরণ , যৌন আবেগ, হজম শক্তি, ইমিউনিটি শক্তি ইত্যাদি নিয়ত্রন করা -কিন্তু যদি কোন কারনে এই সিস্টেম সমুহ কাজ না করে অথবা দুর্বল বা নিষ্ক্রিয় থাকে তাহলে সঠিক ভাবে নারী হরমোনের ভারসাম্যতা রক্ষা করতে পারেনা বরং মস্তিক্সের সেরেটোনিন হরমোনের ক্ষয় বৃদ্ধি করে মানসিক ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা প্রিম্যান্সট্রুয়েল ডিস্পরিক ডিসঅর্ডারে চলে যায় ( premenstrual dysphoric disorder (PMDD) ।

৩- ভিটামিন পুস্টিহিনতা এবং মানসিক ভারসাম্যতা ঃ গবেষণা অনুসারে ৭৩% বেলায় ভিটামিন বি-৬ এর মাত্রারিক্ত স্বল্পতা,রক্তশূন্যতা ( হিমোগ্লোবিউনের স্বল্পতা ) , মারাত্মক পুস্টিহিনতা ( ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন,ক্যালসিয়াম , জিঙ্ক ইত্যাদি খনিজ ) অথবা অনিয়ন্ত্রিত হজম শক্তি, লবণাক্ত খাবার , ক্যাপেইন জাতীয় পানি ( চা-কপি ) ইত্যাদি কারনেই হয়ে থাকে ।

এ ছাড়া ও – বংশগত – ( যেমন মায়ের হলে মেয়ের ও হতে পারে ), পারিবারিক সহিংসতা, ভ্যাক্টিম এবং রেপ, শারীরিক ও মানসিক আঘাত, অতিরিক্ত উদ্ধেগ , মানসিক চাপ এবং ক্লান্তি , সিজোপেনিয়া এবং বিপোলার সিন্ড্রেম, ,ডিসমেনোরিয়া, ওভারিয়ান সিনড্রম , থায়রয়েড জনিত সমস্যা , অনিয়ন্ত্রিত পায়খানা (IBS), মাংশপেশি জনিত বাথ ব্যাধি ইত্যাদি কারনে হতে পারে ।



লক্ষন ঃ ( মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের লক্ষন প্রায় ২০০ অধিক )

pm-8
যদি নিম্নের লক্ষন সমুহের মধ্যে অন্তত ৫ টি লক্ষণ, মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৭ থেকে ১৩ দিন আগে দেখা দিলে অবশ্যই মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম বলতে পারেন । ( ৯০% বেলায় মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ৫ দিন আগে দেখা দেয় আবার মাসিক শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় )

শারীরিক উপসর্গ ( ফিজিক্যাল )
স্তন ফুলে যাওয়া এবং আবেগপ্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া ও ব্যাথা অনুভব করা , পেটের গ্যস বৃদ্ধি সহ কোষ্ঠকাঠিন্য, বা ডায়রিয়া বা অনিয়ত্রিত পায়খানা হওয়া ,*.খাবারে রুচির পরিবর্তন হওয়া বিশেষত লবণ এবং চিনি একটু বেশী খাওয়ার ইছছা বেড়ে যাওয়া ,শরীরে রস জমে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, ত্বকের সমস্যা (ব্রণ বৃদ্ধি ) , মাথা ব্যাথা এবং মাইগ্রেন (মাইগ্রেন PMS উপসর্গের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে), মাঝে মধ্যে অস্থিসন্ধি অথবা মাংসপেশীতে কামড়ানো থরপানো ইত্যাদি নানা ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে ।

মানসিক ও আচরণগত উপসর্গ
দুশ্চিন্তা ও উদ্বিগ্নতা, .বিষন্নতা, .হঠাৎ কেঁদে ফেলা, .মেজাজ উঠা-নামা করা ( ক্রোধান্বিত ও শত্রুতা বৃদ্ধি পাওয়া ) সেই সাথে তন্দ্রাভাব, ক্লান্তি, এবং শক্তির অভাব অনুভব করা .নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা হওয়া, .সামাজিক কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকা (Social withdrawn), ঠিক মত সব কিছুতে মনোযোগ না দেওয়া বা অনেক কিছু সঠিক ভাবে মনে রাখতে না পারা সহ যৌন আগ্রহ এবং ইচ্ছা পরিবর্তন ( বেশির ভাগ ক্ষেতে সহবাসের অনীহাই বেশী ) যা মাসিক চক্র শেষ হওয়ার সাথে সাথে তা চলে যায় ।


পরীক্ষা-নিরীক্ষাঃ
pm-10
তেমন কোন শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন নাই । তারপর ও অসুখটি মারাত্মক পর্যায়ের মনে করলে চিকিৎসকরা ২/৩ মাসিক চক্রের ইতিহাস, মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম চার্টের সাথে মিলিয়ে মহিলা হরমোন সেক্রেশন এনালাইসিস এবং অন্যান্য পুস্টি উপাদান জানার জন্য রক্ত পরীক্ষার কথা বলতে পারেন । চাইলে আপনি নিজে নিজেই সেই চার্টের সাথে নিজের অসুখের লক্ষন মিলিয়ে অসুখটি থেকে রেহাই পেতে পারেন , মনে রাখবেন চার্টের সাথে অন্তত ৫টি লক্ষনের মিল থাকতে হবে এবং সে ক্ষেত্রে পিএম এস পজেটিভ ধরে নিতে পারেন ।


মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম কি কি জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে ঃ
খাওয়া দাওয়া ও রুচির পরিবর্তন – রক্তশূন্যতা ( থায়রয়েড ডিসঅর্ডারের বেলায় হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা ) , ডায়াবেটিস, ওভারিয়ান সিস্ট বেড়ে যাওয়া, মাথা ঘোরানো বা পরে যাওয়ার মত অবস্থা ( অথচ ব্লাড প্রেসার ঠিক মতই থাকে ) , জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবনে পার্স প্রতক্রিয়া ইত্যাদির সাথে যাদের বয়স একটু বেশী (৩৩ এর উপরে ) তাদের বেলায় স্থনে ব্যাথা, অনিদ্রা , বিনা কারনে মাথা ব্যাথা সহ মিজাজের ঘন ঘন পরিবর্তন বেশী দেখা দেয় এবং গড়ে মাসিক চক্র শেষ হওয়ার পরের সপ্তাহ শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সবচেয়ে ভাল থাকে । গবেষণা অনুসারে দেখা যায় যারা পুরাতন মাসিক পূর্ব রোগী তাদের বেলায় মাইগ্রেন, হাঁপানি , ভায়েল সিন্ড্রোম, মৃগী রোগ ,multiple sclerosis ইত্যাদি থাকলে তা তখন খুব বেশী বৃদ্ধি পায় ।


চিকিৎসা ও ব্যাবস্থাপনা ঃ
pm-11
মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোমের বেলায় প্রথম স্থরে চিকিৎসার তেমন কোন প্রয়োজন হয়না যদি সঠিক পুষ্টিকর খাবার বিশেষ করে , আয়রন , ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ডি , ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬ জাতীয় খাবার একটু বেশী খেতে পারেন ( যেমন আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত )

সেই সাথে লবন চিনি, চা-কফির পরিমান একটু কম খাবেন ও প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক খাবার ( শসা ইত্যাদি ) বেশী খাবেন । মেজাজ পরিবর্তন এবং হতাশাগ্রস্থ মনে হলে নিজ ধর্মের কর্ম ( নামাজ/ উপশনা ) , সামাজিক ও পারিবারিক উপকৃত কাজে নিজকে জড়িয়ে রাখার চেস্টা করুন এবং সেই সাথে সকালে মর্নিং ওয়াক অথবা হাল্কা ব্যায়াম করার চেস্টা করুন । কোন অবস্থাতেই বিচানায় যাওয়ার পর বই পড়া, টিভি অথবা সে জাতীয় কোন কিছু করা থেকে বিরত থাকতে হবে । বিচানায় যাওয়ার পর উক্তেজক পানীয় ( চা-কফি ) পান না করা, বিবাহিত থাকলে নিয়মের অতিরিক্ত সহবাস ও অপ্রীতিকর সহবাস থেকে বিরত থাকা উচিৎ ।

রিসার্চ ঃ হরমোনের ভারসাম্যতাজনিত কারনে হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে মহিলা হরমোন ঔষধ সেবনে তা ঠিক হয়ে যায় অথবা পুনরায় সন্তান গ্রহন করলে তা আর থাকেনা ( যদি প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় অথবা অকার্যকর হয়ে থাকে ) অথবা যাদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ইছছা না থাকে তারা নিউট্রেলাইজ জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করলে কিছুদিন ( ৩ মাসিক চক্র ) পর তা চলে যাওয়ার কথা ।

অবিবাহিতদের বেলায় সুষম খাদ্য গ্রহন সহ উক্তেজক বা ইমোশনাল কিছু করা থেকে বিরত থাকা ( বিশেষ করে রাতের বেলায় ) সহ রুটিন মাফিক দৈনিক লেখাপড়া অথবা ধর্ম কর্ম ( নামাজ / উপাসনা ) সহ পরবর্তী অথবা আগাম দিনের কর্মসূচী নিয়ে বাস্থবভিত্তিক চিন্তাভাবনায় ব্যাস্থ থাকা উচিৎ । তারপর ও যদি তা না সারে তাহলে ( কম্বাইন্ড ) নর্মাল জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ২৮ দিন সেবন করলে তা সেরে যাওয়ার কথা অথবা বিবাহ করার চিন্তা ভাবনা করতে পারেন । মনে রাখবেন যদি তা হরমোন প্রভাবে না হয়ে শারীরিক অন্য কোন কারনে হয়, ( যেমন থায়রয়েড হরমোনের অকার্যকরীতা , হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, নিউরোমাসুলার জাতীয় অসুখ ইত্যাদি ) তাহলে তা বিয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বিধায় মেনোপজের আগ পর্যন্ত সমস্যা সমুহ লেগে থাকতে পারে । ( বিস্তারিত পরবর্তী পরবে দেখুন )


সতর্কবাণী ঃ
মনে রাখবেন অভ্যাসগত কারনে মাসিক পূর্ব সিন্ড্রোম জাতীয় সমস্যার সৃষ্টি করলে পরবর্তীতে শত চেস্টা করেও শুধু ঔষধ দিয়ে তা নির্মূল করা সম্বভ হয়না ( মেডিক্যাল রিসার্চ ) যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের ক্ষতিকারক অভ্যাস সমুহ দূর না করতে পারবেন ! এর জন্য চিকিৎসকদের কাছে না যাওয়াই ভাল । তবে শারীরিক সমস্যাজনিত কারনে অসুখটির সৃষ্টি হলে এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করলে ৯৫% বেলায় তা ভাল হওয়ার কথা, যদি ও এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ঔষধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে । ( ডাঃ হেলাল )

গ্রেড বি — অসুখের লক্ষন সমুহ যদি ৬ মাসিক চক্রের উপরে চলে যায় তাহলে নিম্নের ঔষধ সেবনের পরামর্ষ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা —-

চিকিৎসকের পরামর্ম অনুযায়ী ব্যাথা থাকলে ব্যাথা নাশক ব্যথা নাশক (Nonstcroidal anti-inflammatory) যেমন — ibuprofen (Motrin, Advil), indomethacin (Indocin) ketoprofen ইত্যাদি মসিক চক্রের ৭ দিন পূর্ব থেকে সেবন করতে হয় ৪ দিন । ( বিদ্রঃ দীর্ঘ দিন এ সব ঔষধ সেবন করলে পাকস্থলীর এসিড বৃদ্ধি সহ পাকস্থলীতে আলচার হতে পারে ) । অথবা যাদের হাইপার এসিডিটি হওয়ার সম্বাভনা তাদের বেলায় Tylenol গ্রোফের ঔষধ বা প্যারাসেটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন ।

দুশ্চিন্তা ও হতাশাগ্রস্থ মনে হলে বিষন্নতা রোধী (Antidepressants) ঔষধ যেমন Fluoxetine (Prozac, Sarafem, generic), Sertraline (Zoloft, generic), Paroxetine (Paxil, generic) মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ১৪ দিন আগ থেকে ৭/১২ দিনের জন্য সেবন করতে পারেন ( এই সব ঔষধ দীর্ঘদিন সেবনে অভ্যাসে পরিনত হওয়ার সম্বাভনা আছে বিধায় চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া একনাগাড়ে দীর্ঘ দিন সেবন করা ঠিক নয় । অথবা আপনার চিকিৎসকের পরামর্ষে Disopan (Clonazepam – called anxiolytics) সেবন করতে পারেন ।


হরমোন জনিত ভারসাম্যতা অথবা নিষ্ক্রিয়তা হলে ঃ
হরমোন জনিত ভারসাম্যতা মনে করলে কোম্বাইন্ড জন্ম নিয়ত্রন বড়ি ( ইস্ট্রোজেন ও প্রেজেস্টারন মিশ্রিত ) একনাগাড়ে ৩ মাসিক চক্র সেবন করতে হয় – যদি হরমোন এনালাইসিস করে দেখা যায় প্রজেস্টারন হরমোন ঘাটতির কারনে মাসিক পূর্ব সিনড্রোম দেখা দিয়েছে তাহলে মিনি পিল বা প্রজেস্টারন জন্ম নিয়ত্রন বড়ি সেবন করতে পারেন ।
৯৫% পি এম ডি ডি ( premenstrual dysmorphic disorder ) রোগীর বেলায় ইস্ট্রোজেনের ভারসাম্যতার ফলে অসুখটি হয়ে থাকে তারপর ও যদি উক্ত মহিলা অবিবাহিত হয়ে থাকে তাহলে একক ভাবে তখন অতিরিক্ত যৌন কামনা বা অন্যান্য কারনে ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির ফলে প্রজেস্টারন হরমোন নিষ্ক্রিয় হতে পারে বিধায় বিশেষজ্ঞরা মিনি পিল সেবন করার পরামর্ষ দিতে পারেন ।

অথবা ইস্ট্রোজেন প্যাঁচ ( অর্থোইভরা ) বা ইনজেকশন গ্রহণ (Medroxy progesterone acetate ) প্রয়োগ করতে পারেন । ( বিদ্রঃ যাদের মেনোরেজিয়া বা অতিরিক্ত মাসিক স্রাব দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে তাদের বেলায় এ জাতীয় ঔষধ সেবন করা ঠিক নয় ।

তৃতীয় স্থরের ক্ষেত্রে ঃ
গোনাড্রট্রপিন রিলিজিং হরমোন ঃ gonadotrophin-releasing hormone (GnRH)
নতুন ভাবে প্রমানিত leuprolide acetate ( Lupron / Zoladex নামে বাজারে এসেছে ) – ড্রাগসটি টেস্টারন এবং ইস্ট্রোজেন হরমোন কে নিয়ত্রন করে বিধায় পি এম এস এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ফল দায়ক মনে করেন বিশেষজ্ঞরা – । ( যদিও ড্রাগসটি পুরাতন পুরাতন বয়ঃসন্ধি , ওভারিয়ান টিউমার, জরায়ুর টিস্যু বৃদ্ধি, ইত্যাদি অসুখের জন্য ইহা ব্যবাহার করা হয় ) ।

অথবা
নির্দিষ্ট কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে – বিশেষ করে মাত্রাতিরিক্ত অনিয়ত্রিত মহিলা হরমোন জনিত কারনে হলে Danazol (Danocrine) ( ড্রাগসটি একধরনের রিফাইনিং পুরুষ হরমোন হিসাবে বিবেচিত এবং যাদের রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টারল তাদের ক্ষেত্রে  ব্যাবহার  নিষেধ ) বিশেষজ্ঞরা তা সেবনে ভাল ফলদায়ক হিসাবে মনে করেন ।



শরিরের স্থূলতার লক্ষন থাকলে ঃ pm-12
মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের সময় যাদের শরীর হঠাৎ স্ফিত অথবা ওজন বাড়ার মত মনে হয় সে ক্ষেত্রে সল্প মেয়াদী মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবন করা যেতে পারে যেমন , লেসিক্স ট্যাবলেট ইত্যাদি ।

লক্ষন হিসাবে যদি দেখেন মাসিক শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ২ সপ্তাহ আগে শরীরের ওজন ২/৪ কেজি বৃদ্ধি পায় ( সাধারনত ব্রার সাইজ ৩২ থাকলে তখন ৩৪/৩৬ হয়ে সহ শরীরের জামা কাপড় খুব টাইট হয়ে যায় ) আবার মাসিক শেষ হওয়ার পর ওজন আবার কমতে থাকে এবং সে কারনে স্থন, উরু ও নিচ পেটে চাপ দিলে ব্যাথা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি লক্ষন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞরা খুব সতর্কতার সাথে সল্প মেয়াদী প্রস্রাব বৃদ্ধি কারক ঔষধ সেবন করার পরামর্ষ দিয়ে থাকেন । ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন মুত্র বর্ধক ঔষধ সেবনে শরিরের পটাসিয়াম এবং মেগ্নেশিয়ামের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয় বা কিডনির উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে বিধায় খুব বেশী প্রয়োজন না হলে তা এড়িয়ে চলা ভাল এবং বিকল্প হিসাবে মুত্র বর্ধক খাবার একটি বেশী খাওয়া সহ যতা যত ডায়েটের অভ্যাস করলে তা চলে যেতে পারে যেমন, লেবুর শরবত, টমেটো, শসা, কদুর বীচি , তরমুজ ইত্যাদি )



সহযোগী মেডিসিন এবং ভেষজ চিকিৎসা ঃ ( Alternative medicine )

গবেষণা অনুসারে দেখা যায় ভিটামিন সমুহের মধ্যে ভিটামিন বি-৬ মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে ভাল একটি কার্যকরী সাপ্লিমেন্ট – সে জন্য সকল স্থরের বেলায় প্রতিদিন ১০০ মিগ্রাঃ পরিমান ভিটামিন বি-৬ ট্যাবলেট সেবন করুন । ( বিদ্রঃ যাদের আয়রন এবং ক্যালসিয়ামর ঘটতি জনিত কারনে হয়ে থাকে তাদের দীর্ঘদিন এ জাতীয় ঔষধ সেবন না করলে অন্য কোন ধরনের ঔষধ সেবনে সাময়িক কাজ হলেও পরবর্তীতে তা আবার দেখা দিবেই )
বি-৬ খাদ্য উৎস ঃ আটা, ওটমিল, ব্রকোলি, ফুলকফি, মাশরুম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ, মটরশুঁটি, কিশমিশ, কলা, লাল আলু, পালংশাক ইত্যাদি । এ ছাড়া অন্যান্য ভিটামিন যেমন ভিটামিন ই, বি-৩ , বি-২, ফলিক এসিড , ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি কিছুটা উপকারী ।

ভেষজ হিসাবে এফ ডি এ কৃতক অনুমোদিত ঃ
pm-13
যদিও অনেক ভেষজ আছে উপকৃত তারপর ও রিসার্চ এবং গবেষণা অনুসারে সাফ্রন ই মাসিক পূর্ব সিনড্রোমের জন্য সবচেয়ে উপকারী একটা ঔষধ , যা সকলের কাছে গ্রহন যোগ্য – সে জন্য ( প্রথম ও দ্বিতীয় স্থরের অসুখে ক্যাপসুল সাফ্রন ১৫ মিগ্রাঃ (capsule placebo ) প্রতিদিন দিনে দুইবার অন্তত ২ টি মাসিক চক্র পর্যন্ত সেবন করলে নিঃসন্দেহে ভাল ফল পাওয়ার আসা করতে পারেন ।

মাসিক পূর্ব সিনড্রোমে মাসিকে শুরু হওয়ার ১৪ দিন অথবা ৭ দিন আগে যাদের হাত পা জ্বালা যন্ত্রণা, কামড়ানো ইত্যাদি শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে সে জন্য ইভিনিং প্রমিজ ওয়েল ম্যাসেজ সবচেয়ে বেশী উপকারী যা অন্যান্য ম্যাসেজ মালিশে তেমন কাজ করেনা ।



কিছু অতিরিক্ত নিয়ম এবং উপদেশ ঃ ( রিসার্চ থেকে )

খাদ্যতালিকার দিকে একটু মনযোগী হবেন । বিশেষ করে মাসিক পূর্ব ১৪ দিন থেকে বিভিন্ন জ্যাঙ্ক খাবার ( বার্গার, ফ্রাইস ইত্যাদি ) থেকে বিরত থাকবেন, সুগার জাতীয় ড্রিংক পান করবেন না তবে ঠান্ডা পানি পান একটি বেশী করবেন ।
খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন বা চিনি না খাওয়া এবং যে যে খাবার প্রস্রাবের মাত্রা কমায় তা থেকে বিরিত থাকা ইত্যাদি । সেই সাথে হাল্কা ব্যায়াম (পেশী শিথিল করা এবং গভীর শ্বাস গ্রহণের ব্যায়াম করতে হবে বা যোগব্যায়াম বা ম্যাসাজ করা ভাল ) , নিয়মিত সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা এবং দিনে ঘুমানোর চিন্তা ভাবনা না করা ।
হিমোগ্লোবিন স্বল্পতা বা পুস্টি জনিত অন্যান্য খনিজের অভাবে হলে নিয়মিত পুষ্টিকর ও আয়রন জাতীয় খাবার বেশী গ্রহন করা সহ একনাগাড়ে দীর্ঘদিন সে জাতীয় সাপ্লিমেন্টারী ঔষধ সেবন করার চিন্তা ভাবনা করা ।

যদি রোগী বিবাহিত হন এবং দাম্পত্য যৌন জীবনে স্বামীর যৌন স্থবিরতা চলে আসার ফলে ইস্ট্রোন হরমোনের অনাকাঙ্কিত রুপ ধারন করে সে ক্ষেত্রে উভয়য়ের খোলা মেলা আলোচনা করে চিকিৎসকের পরামর্ষে মেডিক্যাল সুত্র অনুসারে নিদ্রিস্ট কিছু ঔষধ এবং প্রক্রিয়া মেনে চললে তা অল্প দিনেই চলে যাওয়ার কথা ।

রোগী বিবাহিত না হলে সে ক্ষেত্রে গার্জিয়ানদের বিবাহ দেওার চিন্তা ভাবনা করা এবং তা না হলে চিকিৎসকের পরামর্ষে নেগেটিভ মহিলা হরমোন জাতীয় ঔষধ সেবনে সাময়িক তা ধমিয়ে রাখা যায় ( বিদ্রঃ মনে রাখবেন ! বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্ষ ছাড়া কোন অবস্তাতেই এ জাতীয় ঔষধ সেবনের চিন্তা ভাবনা করা আর নিজের যৌন জীবন ধংস করা প্রায় সমান ) । তবে আমার ব্যাক্তিগত মতে সবচাইতে উৎকৃষ্ট পন্থা হচ্ছে নিয়মিত নিজ ধর্মীয় কর্ম কান্ড মনযোগ দেওয়া সহ সাংসারিক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের দিকে একটু বেশী ধাবিত হয়ে অভ্যস্থ হতে পারলে পি এম ডি ডি থেকে রেহাই পাওয়া সম্বভ … ।

যদিও চিকিৎসার নিয়মে ট্রাকুলাইজার এবং ডিপ্রেশনাল ঔষধ সমুহ সেবনের কথা বলা হয়েছে , তারপর তা সেবন করলেও কোন অবস্থাতেই দীর্ঘদিন এক নাগাড়ে সেবন না করা ভাল নতুবা মানসিক ভারসাম্যতা তিব্র আকার ধারন করতে পারে ।
ধন্যবাদ ………………………………………।।
Version Info ঃ Created by Dr Helal Kamaly , References from – Bristol Medical University ( UK ) Harvey Simon, MD, Editor-in-Chief, Associate Professor of Medicine, Harvard Medical School; Physician, Massachusetts General Hospital. Also reviewed by David Zieve, MD, MHA, Medical Director, A.D.A.M., Inc.


Monday, 16 January 2017

গনোরিয়া এবং সুপার গনোরিয়া অথবা প্রমেহ রোগ- যৌন রোগ পর্ব -৯ ( GC or SG– STD Part-9 )

গনোরিয়া এবং সুপার গনোরিয়া অথবা প্রমেহ রোগ- যৌন রোগ পর্ব -৯ ( GC or SG– STD Part-9 )

 

g-01
 
 
 
 
 
 
8 Votes

প্রমেহ বা গনোরিয়া রোগ  নিয়ে কিছু ভুল ধারনা ও তথ্য  ঃ
g-03
প্রতিবছর প্রায় ৪৪৮ মিলিওন লোক যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে প্রায় ৭৮ থেকে ৮৮ মিলিওন গনোরিয়ার রোগী  । যার মধ্যে অল্পবয়স্কা তরুণ- তরুণীদের এই রোগে আক্রান্ত হবার হার সবচেয়ে বেশি । মেডিক্যাল রিসার্চ অনুসারে  দুর্ভাগ্য বশত  যদি নিশেরিয়া গনোরি জীবাণু এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স ক্ষ্যামতা ধংস করে ফেলে তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী বার্ষিক এক কোটি মানুষ প্রাণ হারাতে পারে !  যাকে সুপার গনোরিয়া ( super Neisseria )  বলা হচ্ছে । ইতিমধ্যে  ইউকে, অ্যামেরিকা ও জাপানে  এই ব্যাক্টোরিয়ার আক্রমণে বেশ কয়েকজন রোগী মৃত্যুবরণ ও  করেছেন  এবং  সেই স্থরের  কার্যকর এন্টিবায়োটিক এখন ও আবিষ্কৃত হয়নি !
মনে রাখবেন গনোরিয়া অসুখে আক্রান্ত হওয়ার পর  উপযোক্ত  এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে তা সাথে সাথে ৯৯% নির্মূল করা সম্বভ কিন্তু যদি কোন কারনে যথাযথ চিকিৎসা না করেন তাহলে নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়ার সাথে আর অন্যান্য গ্রোফের ব্যাক্টোরিয়া যোগ হয়ে শেষ পর্যন্ত এন্টিবডি রেসিস্ট্যান্স ক্ষ্যামতা নস্ট করে ফেলে এবং তখন  সরবোচ্চ এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করে ও তেমন ভাল রিজাল্ট নাও পেতে পারেন বা এর পরিনিতি খুব ভয়াবহ  ও মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে ।
g-06
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়  অবস্থান অনুসারে যিনি  গনরিয়ায় আক্রান্ত তিনি  রেড  লাইট  জোনের অন্তর্ভুক্ত ( পতিতাবাস ) যতক্ষণ পর্যন্ত নিশেরিয়া গনোরি ন্যাগেটিভ না হবে !   ব্যাক্তি চরিত্র  ও সামাজিক অবস্থান অনুসারে  অবশ্যই আক্রান্ত  ব্যাক্তি ( স্বামী/ শ্রী )  যে কোন একজন ( যার দ্বারা সংক্রামিত হয় )   যৌন লোভী অথবা  খারাপ চরিত্রের  ব্যাক্তি , তা কাউকে বলার অপেক্ষা রাখেনা  ।  মুলত অসুখটি  অবৈধ যৌন মিলনের একটা  বাস্থব বহিঃপ্রকাশ  । তারপর ও প্রথমবার গনোরিয়ায়  আক্রান্ত হলে  সাধারণ এন্টিবায়োটিক সেবনে খুব দ্রুত সেরেই যায় কিন্তু দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হলে উচ্চ  স্তরের এন্টবায়োটিক ছাড়া তখন আর কাজ করেনা কিন্তু তৃতীয় বার আক্রান্ত হলে উচ্চ  স্তরের এন্টবায়োটিক অনেক দেরিতে কাজ করলে ও ৮০% বেলায় যৌন অক্ষমতা দেখা দিয়ে থাকে , অর্থাৎ বারে বারে ভুল করে নিজের ইচ্ছায় নিজের ক্ষতি ঢেকে আনবেন । সবশেষে যখন আর কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবেনা তখন এই নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়াটি সুপার নিশেরিয়া গনোরিতে রূপান্তরিত হতে পারে । যা সমাজ দেশ ও জাতীর জন্য এইডসের চাইতে ও ভয়ঙ্কর –  HO41 ।
এ ছাড়া   রক্ত পরিক্ষা করে নিশেরিয়া গনোরি পজেটিভ হলে  উচ্চ  ক্ষ্যামতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক ছাড়া অন্যান্য শাস্রিয়  বা পদ্ধতিগত চিকিৎসা কাজ করেনা ( বিশ্ব স্বাস্থ্য ) এবং সে সময় যে কোন চিকিৎসক রোগীকে জীবাণু ধ্বংসকারী এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করে অন্যান্য  সনাতন পদ্ধতির যে কোন অপ্রমাণিত ঔষধ প্রয়োগ করা ও বেআইনি ( সি ডি সি ) বা  অমানবিক ।  তার পর ও কীভাবে এন্টিবায়োটিক ছাড়া অন্যান্য সাস্রিয় চিকিৎসকরা গনোরিয়া ভাল করার কথা বলে থাকেন আমার বুজতে বেশ কষ্ট হয়  । আর তাই যদি সত্যি হয় তাহলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করার কি ই বা প্রয়োজন ছিল গরীব রাষ্ট্র সমূহের ?
মেডিক্যাল জার্নালের তথ্য মতে যতটুকুই দেখেছি,  মুলত গনোরিয়া বা প্রমেহ রোগের অসুখের  মত লক্ষন থাকলে ও আসলে তা নিশেরিয়া গনোরি ব্যাক্টোরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত অসুখ  নয় ( অর্থাৎ গনোরিয়া নয় ) অন্য অসুখ এবং তা শরীরের এন্টিবডির ক্ষ্যামতা বৃদ্ধি করে অসুখটি থেকে অনেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন এবং তখন  রোগিরা বুজে থাকেন তার গনোরিয়া  রোগ হয়েছিল । তাই আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুগে  সবাই এসব ধ্যান ধারনা   থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ । ( সেক্রেট অব মেডিক্যাল জার্নাল –  )
 
গনোরিয়া (Gonorrhea ) কি এবং কীভাবে সংক্রামিত হয় ঃ
g-07
গনোরিয়া  হচ্ছে একটি  যৌনবাহিত রোগ  ( Neisseria gonorrhoeae )  যা নিশেরিয়া গনোরি নামক জীবাণু এই রোগের সৃষ্টি করে । আমাদের গ্রামীণ ভাষায় একে  প্রমেহ রোগ  বলে থাকেন  অনেকে ।
প্রকৃত পক্ষে এটি একটি জীবাণুবাহিত রোগ, যা   নিশেরিয়া গনোরি  জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত  ব্যাক্তির সাথে যোনি বা পায়ুপথে মিলন , ওরাল  বা মুখমেহন যৌন মিলনের   মাধ্যমে এক দেহ থেকে অন্য সুস্থ দেহে  সংক্রামিত হয়ে থাকে । এ ছাড়া যারা সেক্স টয় একে অন্যকে শেয়ার করেন অথবা অনেক সময় আক্রান্ত ব্যাক্তির  গোফন অঙ্গ স্পর্শ করার কারনে আঙ্গুলের নুখ থেকে চুখের  পাতায় ও সংক্রামিত হতে পারে  (  touching the private parts and then the eyes) । মনে রাখবেন   চুম্বন, হাত ধরা, গোসল করা, টাওাল, কাপ, টয়লেট সিট  ইত্যাদি থেকে  নিশেরিয়া গনোরি  জীবাণুর  বিস্তার লাভ করে না  অথবা ইহা   বংশ পরম্পরায় সংক্রমিত হয় না।  –
জীবাণু সংক্রামিত হওয়ার পর ২ থেকে ২১ দিনের ভিতর  পুরুষের  মূত্রনালী,  মহিলাদের যোনি ও যোনি পথ ,সমকামীদের বেলায়  পায়ুপথ এবং মুখমেহন যৌন মিলন কারিদের  গলায় নিশেরিয়া গনোরি  ক্ষতের সৃষ্টি করে  এবং পরবর্তীতে সঠিক এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ না করলে  যৌনাঙ্গের অন্যান্য অঙ্গ আক্রান্ত হতে  থাকে এবং অসুখটি তৃতীয় পর্যায়ে চলে গেলে   সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া অনেকটা  সুস্থ নাও হতে পারেন   ।
রিসার্চ ঃ গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলার সাথে একবার যৌনকর্ম করলে পুরুষলোকের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ২০% বেশী হলেও আক্রান্ত পুরুষের সাথে একবার যৌনমিলনে একজন মহিলার এই রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি প্রায় ৬০-৮০% । বিপরীত দিকে সমকামী পুরুষের বেলায় তা  ৯১%  বেশী । এ ছাড়া  গনোরিয়ায়  আক্রান্ত মহিলাদের   জীবাণুটি সুপ্ত অবস্থায় বেশ কিছু দিন  লুকিয়ে থাকতে পারে বিধায় পুরুষের চাইতে মহিলাদের একটু দেরিতে লক্ষন দেখা দেয়  ।
 
 
সুপার গনোরিয়া ঃ ( Gonorrhea HO41 )
g-1
সর্ব প্রথম ২০১১ সালে ৩১ বছর বয়সী জাপানী একজন পতিতার শরীরের এই ব্যাক্টোরিয়াটি ধরা পরে এবং পরবর্তীতে তাকে উপযোক্ত এন্টিবায়োটিক দিয়ে ও রক্ষা করা সম্বভ হয়নি – অর্থাৎ গনোরিয়া চিকিৎসার সর্বশেষ এন্টিবায়োটিক  ড্রাগস ceftriaxone এবং  azithromycin যদি কোন কারন বশত কাজ না করে তখন তাকেই সুপার গনোরিয়া ( HO41) বলা হয় এবং যদি কোন কারন বশত উক্ত সুপার নিশেরিয়া গনোরি অন্য সুস্থ দেহে প্রবেশ করে সে ও সমপর্যায়ে আক্রান্ত হতে পারে । অসুখটির  নতুন কোন ঔষধ এখন ও বাহির হয়নি ।  ( journal Antimicrobial Agents and Chemotherapy ) –
সে জন্য নতুন এই যৌন রোগটি যদি কোন কারনে সংক্রামণ বৃদ্ধি পায় তাহলে অনেক  চিকিৎসা বিজ্ঞানীর আশঙ্কা , এইডসের চাইতে ও ভয়ানক রুপ নিতে পারে ।  সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেখা যায় যে সব অঞ্চলে পুরুষ সমকামীর সংখ্যা বেশী সেই সব অঞ্ছলেই এই জীবাণুটির সংক্রামণ বেশী  । সে জন্য জাপান,  ইউকে, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যামেরিকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সমুহ সব সময় সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
( http://www.cdc.gov/std/gonorrhea/arg/b88-feb-2005.pdf )
 
 
গনোরিয়া রোগের লক্ষণসমূহ ঃ
g-010
সুপ্তিকাল : রোগাক্রান্ত সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সঙ্গে দৈহিক মিলনের পর ৩ থেকে ১০ দিনের মধ্যে এ রোগের প্রকাশ ঘটে। সাধারণত পুরুষের ক্ষেত্রে মূত্রপথের সামনের অংশে জীবাণু সংক্রমণ শুরু করে এবং মহিলাদের যোনি  ও যোনি নালিতে প্রথম সংক্রমণ শুরু হয় । ক্ষেত্র বিশেষ অনেকের বেলায় স্বাভাবিক জ্বালা যন্ত্রণা ও সামান্য শ্লেষ্মা যুক্ত পানি  ছাড়া কয়েকদিন আর কোন লক্ষন দেখা নাও দিতে পারে ( বিশেষ করে মহিলাদের বেলায় ) কিন্তু যদি জীবাণুটি একটিভ থাকে তাহলে ২৭ দিন পরে ৫৯ দিনের আগে অবশ্যই নিচের লক্ষন সমুহ দেখা দিবে । তখন জীবাণুটি দ্রুত জরায়ুর মুখ, ডিম্বাশয়য়, ডিম্ব নালী , প্রেস্টেট গ্ল্যান্ড, মুত্র থলি ইত্যাদি সহ সারা শরীরে ছড়িয়ে পরতে পারে ।
 
 
মহিলাদের ক্ষেত্রে যে সব লক্ষন দেখা দিতে পারে  ঃ
g-011
⦁ যোনিপথে অস্বাভাবিক নিঃসরণ (সচরাচর, সাদা, সবুজ কিংবা হলুদ) সহ হালকা চুলকানি দেখা দিয়ে থাকে । – যৌনাঙ্গ সংক্রমণের কারণে যোনির ওষ্ঠে লাল, দগদগে ঘা হয় যা দেখতে লালা অথবা হলুদ বর্ণের । – প্রস্রাবের তীব্র ইচ্ছা থাকতে পারে। প্রস্রাবে যন্ত্রণা হয়। – যোনি বড় হয়ে ফুলে যাওয়া বা যোনির মুখ খুল লে সাদা স্রাব পতিত হওয়া   এবং যৌন  মিলনে খুব কষ্ট অথবা অনীহা বৃদ্ধি পাওয়া অশ অনেক ধরণের লক্ষন থাকতে পারে ।  সেই সাথে  সামান্য জ্বর, ম্যাজম্যাজ ভাব  প্রায় দেখা দিতে পারে।  ( তবে  যাদের শরীরের ইমিউনিটি শক্তি বেশী তাদের বেলায় (   ৩০% )    প্রাথমিক উপসর্গ ছাড়াই জীবাণুর বংশ বৃদ্ধি বাড়তে থাকে )
বিঃদ্রঃ ( উক্ত লক্ষন সমুহ মহিলাদের গনোরিয়া জাতীয় অসুখ ছাড়া ও অন্য যে কোন জীবাণু অথবা মুত্র থলির প্রদাহ, ভ্যাজিনাল ইনফেকশন ইত্যাদি কারনে ও দেখা দিতে পারে– তবে,  যদি বিগত ৩ সপ্তাহের ভিতরে  স্বামী শ্রী  যে কারও অবৈধ যৌন মিলনের ইতিহাস থাকে তাহলে যৌন জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনাই বেশী বিধায় সাথে সাথে রক্ত ও প্রস্রাব পরিক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ – বিস্তারিত মহিলাদের সুখ দুঃখ পর্বে দেখুন  )
 মহিলাদের বেলায় যারা দীর্ঘদিন গনোরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত অথবা সঠিক চিকিৎসা না করালে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ ( সাধারণত ৫৯ দিনে পর ) 
g-013
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, ব্যথা ছাড়াও মূত্রাশয়ের প্রদাহ হতে পারে ।  ডিম্ববাহী নালীতে প্রদাহ ,  বার্থোলিন গ্রন্থির প্রদাহ সহ তলপেটে চিন চিন ব্যথা । – ডিম্ববাহী নালী, ডিম্বাশ্বয় কিংবা তলপেটের মধ্যে ফোঁড়া হতে পারে। মাসিক অনিয়মিত হয় এবং তীব্র ব্যথা হয় অথবা গুরতর ক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে । পায়ুপথের মিলন  থেকে কিংবা নিজের সংক্রমিত যোনি থেকে মলদ্বারে সংক্রমণ হতে পারে এবং পরবর্তীতে  মলনালী পথে নিঃসরণ এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে।  ওড়াল যৌনতার  কারণে মুখ থেকে গলার ভিতর সংক্রমণ ও পরে গাঁ  হতে পারে অথবা অসাবধানতা বশত আঙ্গুলের নুখ থেকে জীবাণু  চুখের ভিতর সংক্রামিত হয়ে সেখানে ক্ষতের  সৃষ্টি করতে পারে ( যদি ও তা খুব কম ক্ষেত্রে দেখা যায় ) ।
দীর্ঘদিন সংক্রমণের কারণে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ ( হাঁটু বা গোড়ালিতে পুঁজ জমে গিঁরা ফুলে যেতে পারে যা  বাতব্যথার মতো উপসর্গ )  ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে।  ইনফেকশন কমানো না গেলে  অথবা সঠিক চিকিৎসা না হলে এই রোগের কারণে যৌনাঙ্গ সিথিল হয়ে যেতে পারে। ডিম্বনালির ছিদ্রপথ বন্ধ হয়ে সন্তানধারণের ক্ষমতা হারাতে পারে । মোট কথায়  চিরস্থায়ী যৌন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মনে রাখবেন দীর্ঘ স্থায়ী গনোরিয়া জাতীয় অসুখে ৭০% বেলায়  সিফিলিস, ক্যান্ডিডাস বা অন্যান্য যৌন রোগ  ও এর সাথে জড়িত থাকে এবং সেকেন্ডারি পর্যায়ে আক্রান্ত মহিলারা যৌন সংক্রামক  রেড লাইট  জোনের  অন্তর্ভুক্ত ( যৌন রেড লাইট  জোন  বলতে বুজায় যে সকল অঞ্চলে  পতিতা ও খদ্দরের বসবাস  ) বিধায় সেইফ ম্যাথডে ( কনডম )  যৌন মিলন করলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ বলা ঠিক নয়  ।
 
 
পুরুষের ক্ষেত্রে যে সকল  উপসর্গ  দেখা দিতে পারে ঃ
g-4
⦁ সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যাক্তর সাথে যৌন মিলনের ২ থেকে ১০ দিন পর রোগের উপসর্গ দেখা দেয় এবং সবচেয়ে বেশী  প্রথম অবস্তায় লিঙ্গের  সম্মুখভাগেই  সংক্রমণ ঘটে। বারবার প্রস্রাবের ইচ্ছা করে। মূত্রনালীতে প্রদাহের কারণে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা করে।  লিঙ্গপথে রস নিঃসৃত হয় যা যৌনাঙ্গের সংক্রমণের ফলে এ রস তৈরি হয়। প্রথমে পানির মতো থাকে। পরে ঘন, সবুজাভ-হলুদ হয় বা পুরুষাঙ্গের মাথায় পুঁজ জাতীয় পদার্থ লেগে থাকতে দেখা যায়। ৭০%  বেলায় প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগে পুরুষাঙ্গের গায়ে কোনো ঘা বা ক্ষত দেখা না দিলেও  হাত দিয়ে ধরলে হালকা ব্যথা অনুভূত হয় এবং  কিছুদিন পর রোগের উপসর্গ  কমে যায়। এর মানে রোগটি ভালো হওয়া নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রূপ লাভ করতে পারে বলে ধরে নিতে হবে।
 
 
g-018
সমকামীরা পায়ুপথে যৌনসঙ্গম করলে পায়ুপথে সংক্রমণ হতে পারে। মলনালীতে তীব্র ব্যথা হয় এবং রসে ভিজে যায়। যারা ওড়াল যৌনতা করেন তাদের  মুখে সংক্রমণ তথা ঘা সৃষ্টি বা অনেকের  খাদ্য নালীতে ও ঘা ছড়িয়ে পরে ।
বিঃদ্রঃ ( উক্ত লক্ষন সমুহ পুরুষদের বেলায়  গনোরিয়া জাতীয় অসুখ ছাড়া ও অন্য যে কোন জীবাণু অথবা মুত্র নালী ও থলির প্রদাহ সহ  অন্যান্য  যে কোন  কারনে ও দেখা দিতে পারে– তবে যদি এ সময় অবৈধ যৌন মিলন করার ইতিহাস থাকে  তাহলে যৌন রোগের সন্দেহ  করা উচিৎ বা সে জন্য প্রথমেই প্রস্রাব  পরিক্ষা করে  তার দ্বারা আক্রান্ত কিনা নিশ্চিত হওয়া ভাল  বিস্তারিত পুরুষের  সুখ দুঃখ পর্বে দেখুন  )
 
 
পুরুষদের  বেলায় যারা দীর্ঘদিন গনোরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত অথবা সঠিক চিকিৎসা না করালে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ ( সাধারণত ২৮  দিনে পর )
g-11
মূত্রনালীপথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে প্রস্রাব ঠিকমতো বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে কিডনিতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এবং সেই সাথে লিঙ্গের মাতা দিয়ে পুঁজের মত স্রাব বৃদ্ধি পাবে বা হালকা রক্ত আস তে  পারে ।   অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া,  বেদনাদায়ক বা ঘন মূত্রত্যাগের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, শুক্রনালি, এপিডাইমিস আক্রমণ করা সহ লিঙ্গের স্থানীয়  স্নায়ু সমূহকে আক্রান্ত করে ধ্বজ ভঙ্গের মত মারাত্মক অসুখের জন্ম দিতে  পারে ( মনে রাখবেন যদি কোন কারনে লিঙ্গের স্নায়ু  তন্ত্র  সমূহে ক্ষতের সৃষ্টি করে  করে তাহলে পরবর্তীতে যৌন উক্তেজনা ফিরে পাওয়া খুব কষ্ট সাধ্য ব্যাপার  ) অথবা শুক্রাণু উৎপাদন কমে  গিয়ে ফলে পুরুষ বন্ধাত্তের সৃষ্টি করতে পারে  ।
 
g-014
এনাল সমকামীদের বেলায় পায়ূ পথের  চুলকানি, অস্বস্তি, রক্তপাত, বা স্রাব. বৃদ্ধি পেয়ে অন্যান্য কঠিন  রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে ।  দীর্ঘদিনের সংক্রমণের কারণে ( বিশেষ করে বছর খানেক পর )  অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ ( হাটু বা অন্যান্য সদ্ধিস্থলে ব্যাথা করে, ফুলে ওঠে  ) , ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে। (DGI) এবং সেকেন্ডারি পর্যায়ে আক্রান্ত পুরুষরা  যৌন সংক্রামক  রেড এলারট জোনের  অন্তর্ভুক্ত ( যৌন রেড এলারট জোন  বলতে বুজায় যে সকল অঞ্চলে  যৌন কর্মীদের  বসবাস  ) বিধায় সেইফ ম্যাথডে ( কনডম )  যৌন মিলন করলেও সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকা সম্বভ নাও হতে পারে   ।
 
 
গর্ভবতীদের গনোরিয়া হলে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে ঃ
g-10
সাধারণত পুরাতন গনোরিয়া রোগীদের ৫৬% বেলায় ৩ মাসের  ভিতরই গর্ভপাত হয়ে থাকে । তারপর ও যদি গর্ভপাত না হয় তাহলে পরবর্তীতে সময়ের আগে বাচ্চা প্রসব হওয়ার সম্বাভনাই বেশী , বিশেষ করে জরায়ুর প্লাসেন্টা  সময়ের আগে  চিড়ে গিয়ে প্লায়সেন্টার ভিতরের  ফ্লুইড শুকিয়ে যেতে পারে এবং তখন জরায়ুর ভিতরেই শিশুর মৃত্যু হয় , আর যদি তা নয় তাহলে  খুব জরুরী অবস্থায় সিজারিয়ান অপারেশন  ছাড়া মা এবং শিশুকে রক্ষা করা সম্বভ হয়না   ।  ১% বেলায় নিশেরিয়া গনোরি ডিম্ববাহী নালীতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে এবং এ কারণে মহিলার সারা জীবনের জন্য বন্ধ্যাত্ব ঘটতে পারে কিংবা গর্ভ সঞ্চারিত হলে তা  জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ হওয়ার সম্বাভনা বেশী ।
গর্ভাবস্থায় মহিলা গনোরিয়াতে আক্রান্ত হলে শিশু জন্মের সময়ে মায়ের যোনি থেকে তার চোখে সংক্রমণ হতে পারে। সে সময় সাথে সাথে  শিশুকে  সঠিক চিকিৎসা না করলে শিশু অপথাল্মিয়া নিওন্যাটারাম (Opthalmia neonataram) নামক চোখের প্রদাহ নিয়ে জন্ম নিতে পারে যার মধ্যে ৩০%  শিশুর স্থায়ী  অন্ধ হওয়ার সম্বাভনা আছে ।
 
 
রোগ নির্ণয় :
g-016
সাধারণত সম্মানিত চিকিৎসকরা রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস শোনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন । তারপর  ও উপরের লক্ষন সমুহ দেখা দিলে  নিজে নিজেই যে কোন ভাল প্যাথলজিস্ট দ্বারা  মুত্র এবং লিঙ্গ বা যোনির নিঃসৃত পদার্থ পরিক্ষা করে  শতভাগ নিশ্চিত হতে  পারেন  ।

বিশেষ করে যদি  আক্রান্ত ব্যাক্তি  বা তার সহধর্মিণীর  অবৈধ যৌন মিলন করার ইতিহাস থাকে অথবা সন্দেহ হয় তাহলে অবশ্যই আগেভাগেই পরিক্ষা করা ভাল । যদিও  সেইফ ম্যাথডে  ( কনডম ) যৌন মিলন করলে এবং ওড়াল বা হিটার সেক্সুয়েল যে কোন ধরণের যৌন পদ্ধতি অনুসরণ না করলে  গনোরিয়া জীবাণু  সংক্রামিত হওয়ার কথা নয় । অথবা এর আগে  অথিতে অন্যান্য কোন  যৌন সংক্রামক জীবাণুর দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার  ইতিহাস  না থাকলে গনোরিয়া জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কোন কারন নেই বা গনোরিয়ার দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার কথা নয়  ।
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে খুব সহজেই জেনে নিতে পারেন নিশেরিয়া গনোরি পজেটিভ কি-না ?
 
নিউক্লিক এসিড এমপ্লিফিকেশন  টেস্ট Nucleic acid amplification tests (NAAT) ঃ সাধারনত ৫ মিলি প্রস্রাব এর নমুনা  থেকে নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হয় এবং এর  জন্য ২৪/৭২ ঘন্টা সময়এর প্রয়োজন ।
 
গনোরিয়া কালচার টেস্ট ( Gonorrhea culture ) ঃ পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তা থেকে নিঃসরিত পুঁজ বা পদার্থ এবং নারীর ক্ষেত্রে মূত্রনালি ও জরায়ুর মুখ থেকে  নিঃসরিত পদার্থ , সমকামীদের বেলায় পায়ুপথের নিঃসরিত পদার্থ অথবা মুখে ঘা থাকলে সেখানের  নিঃসরিত পদার্থ  ল্যাব্রোটারিতে নিয়ে কালচার ও সেনসিটিভিটি পরিক্ষা করে নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হয় ।

এ ছাড়া অন্য কোন অসুখের বা জীবাণুর সন্দেহ থাকলে  ( স্যালামাইডিয়া, সিফিলিস , ক্যান্ডিডাস ইত্যাদি ) আপনার চিকিৎসক আরও অনেক ধরণের পরিক্ষা নিরীক্ষার কথা বলতে পারেন । তবে সাধারণ গনোরিয়া হয়েছে কিনা তা উপরের পরিক্ষা থেকেই শত ভাগ নিশ্চিত হতে পারেন । USPSTF
 
 

চিকিৎসা ঃ  ( WHO STI guidelines suggest )

g-017
প্রাথমিক ভাবে ( প্রথম স্থরের )  নিশেরিয়া গনোরির উপস্থিতি থাকলে নিম্নের যে একটি এন্টিবায়োটিক সেবনে সুস্থ  হওয়ার কথা
Cipro® XR 500 mg a single dose, or  Levaquin® 500 mg a single dose, or  Tequin® 400 mg a single dose; Doxycycline 100 mg 2–3 times a day for 10–14 days, or  Zithromax® (azithromycin) 1.0 gm a single dose, or   Zithromax® Z-pak® (azithromycin) — 500mg on day 1, followed by 1 tab (250mg) once a day for 4 more days
মনে রাখবেন ঃ  আগেকার দিনের এন্টিবায়োটিক্স এখন আর তেমন কাজ করেনা !  নিচের ঔষধ সমুহ রেজিস্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া সেবন করা আইনগত অবৈধ ?  স্বামী শ্রী উভয়েই এক সাথে  ঔষধ  সেবন করা উচিৎ  … জীবাণু সংক্রামিত হউক বা না হউক ! ঔষধ সেবনের ১ সপ্তাহ পর্যন্ত যৌন মিলন  না করা ভাল  ! আপনার চিকিৎসকের দেওয়া পূর্ণ এন্টিবায়োটিক্স অবশ্যই সেবন করে যেতে হবে এবং এলারজি জাতীয় সমস্যা থাকলে তাও আপনার চিকিৎসক কে অবহিত করবেন এবং দ্বিতীয়বার আর যাতে সংক্রামিত না হন সে দিকে খেয়াল রাখা উচিৎ ।
 ( প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয়, বিশেষ করে বাংলাদেশ তথা এশিয়ান দেশ সমুহে ৯০% রোগিরা সঠিক জীবাণুর কারন না খুঁজে গনোরিয়ার মত রোগের লক্ষন দেখা দিলে চুখ মুজেই  উপরের এন্টিবায়োটিক সমুহ সেবন করে থাকেন যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের আইন অনুসারে মোঠেই ঠিক নয় ।  লক্ষনের উপর ভিত্তি করে উপরের ঔষধ সেবনে ৯০% গনোরিয়া রোগী সুস্থ  হলেও  ১০% রোগীর এন্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্স ক্ষ্যামতা হারিয়ে ফেলে বিধায় তাদের কপালে অনেক দুর্ভাগ্য দেখা দেয় । বিশেষ করে তারাই দীর্ঘমেয়াদী গনোরিয়া সহ আর অন্যান্য অসুখের স্বীকার হয়ে থাকেন । )
যদি উপরের ঔষধ কাজ নাকরে  ( দ্বিতীয় স্থর ) তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা কবাইন্ডস ড্রাগস ব্যাবহারের পরামর্ষ দিয়ে থাকেন এবং তা থেকে ৯৬%  রোগী  সুস্থ হয়ে থাকেন  । বিশেষ করে যারা দীর্ঘ মেয়াদী গনোরিয়া অসুখে আক্রান্ত —তাদের জন্য …
ইনজেকশন Ceftriaxone 250 mg intramuscular (IM) single dose PLUS + ট্যাবলেট   Azithromycin 1 g PO single dose  ।
অথবা
If ceftriaxone is unavailable, patients can be given a single oral dose of cefixime 400 mg plus a single dose of azithromycin 1 g PO
অথবা
Single-drug therapy (one of the following, based on recent local resistance data confirming susceptibility to the antimicrobial): Ceftriaxone 250 mg IM as a single dose; cefixime 400 mg orally as a single dose; or spectinomycin 2 g IM as a single dose
এবং
চুখে ইনফেকশনের সন্দেহ থাকলে Erythromycin 0.5% eye ointment বা ক্রিম ব্যাবহার করতে পারেন
বিদ্রঃ কোন অবস্থাতেই  অসুখটি তৃতীয়বার যাতে আর সংক্রামিত না হয়  সে দিকে খেয়াল রাখবেন , কেননা অসুখটি তৃতীয় স্থরে চলে গেলে স্থায়ী বন্ধ্যাত্ব সহ ক্যানসার অথবা শরীরের  অন্যান্য  মারাত্মক ব্যাধি সহ যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হওয়া অবাস্থব কিছু নয় ।
 
গনোরিয়ার তৃতীয় স্তরের চিকিৎসা  বা শেষ চিকিৎসা মনে করতে পারেন  ( যা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রেখেই চিকিৎসা করা ভাল – যখন সকল ড্রাগস ফেইল হয়ে যায় তখন বিশেষজ্ঞরা রিপ্লেইস্মেন্ট থ্যারাপি হিসাবে ড্রাগস সমুহ ব্যাবহারের উপদেশ দিয়ে থাকেন  )
Ceftriaxone 500 mg IM as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Cefixime 800 mg orally as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Gentamicin 240 mg IM as a single dose PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose or Spectinomycin 2 g IM as a single dose (if not an oropharyngeal infection) PLUS azithromycin 2 g orally as a single dose.
নবজাতকদের জন্য ঃ
Ceftriaxone 50 mg/kg (maximum 150 mg) IM as a single dose or Kanamycin 25 mg /kg (maximum 75 mg) IM as a single dose or  Spectinomycin 25 mg/kg (maximum 75 mg) IM as a single dose

তৃতীয় স্তরের ড্রাগস যখন কাজ করবেনা তখন মনে করতে হবে শরীরের যে কোন একটা দুর্ঘটনা জাতীয়  বড় ধরণের পরিবর্তন আস্তেছে অথবা অসুখটি    সুপার গনোরিয়ার পর্যায়ে চলে গেছে ।  এর জন্য নতুন কোন এন্টিবায়োটিক এখন ও বাহির হয়নি । সেই হিসাবে  এই ব্যাক্টোরিয়াগুলো সংক্রামিত হলে কোটি কোটি জীবন বিনষ্ট করা অসম্বভ কিছু নয় যা এইডসের চাইতে ও মারাত্মক হতে পারে বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মনে করেন ।
ধন্যবাদ ………………………………………………… ।
References ( Created By Dr Helal KAmaly – MPH & Hon Stud of PhD ( PH & MR ) UK
Centers for Disease Control and Prevention. Sexually transmitted disease surveillance 2013. UK . Department of health and Human Services; 2014. Updated March 30, 2015. www.cdc.gov/std/stats13. Accessed July 15, 2015.

Final Recommendation Statement: Chlamydia and Gonorrhea: Screening. U.S. Preventive Services Task Force. December 2014. www.uspreventiveservicestaskforce.org/Page/Document/RecommendationStatementFinal/chlamydia-and-gonorrhea-screening. Accessed July 15, 2015.

Marrazzo JM, Apicell MA. Neisseria gonorrhoeae (Gonorrhea). In: Bennett JE, Dolin R, Blaser MJ, eds. Mandell, Douglas, and Bennett's Principles and Practice of Infectious Diseases. 8th ed. Philadelphia, PA: Elsevier Saunders; 2015:chap 214.

Workowski KA, Bolan GA; Centers for Disease Control and Prevention (CDC). Sexually transmitted diseases treatment guidelines, 2015. MMWR Recomm Rep. 2015;64(3):1-137.